সুপারি পাতা থেকে পরিবেশবান্ধব বাসন, দিনবদলের স্বপ্ন ‘দৃষ্টিহীন’ ভারতীয়ের

জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন তিনি। চোখের আলো নিভলেও, নেভেনি মনের আলো। শ্রীকান্ত বোল্লা (Shrikant Bolla)। হায়দ্রাবাদ শহরে তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘বোল্লান্ত’ প্রান্তিক মানুষদের খুঁজে দিচ্ছে জীবিকার উপায়। শুধু তাই নয়, দূষণের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তিনি। নিজেকে, ‘ওয়েস্ট পার্সন’ (Waste Person) বলতে ভালোবাসেন বোল্লা। বর্জ্য দেখলেই তাঁর মাথায় চাপে ‘পুনর্ব্যবহারের ভূত’।

বোল্লান্তের সাতটি ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টে তৈরি হচ্ছে হাজার হাজার টন পরিবেশবান্ধব বাসনকোসন। কর্নাটকের প্রত্যন্ত গ্রামগুলির চাষিদের থেকে সংগ্রহ করা হয় পচা সুপারি পাতা। স্থানীয় কাগজকল থেকে আসে ফেলে দেওয়া কাগজ। তারপর সেগুলি দিয়ে তৈরি হয়, থালা-বাটি-কাঁটা-চামচ। প্রায় ২০০টি ছোটবড় কোম্পানি বোল্লান্তের নিয়মিত গ্রাহক। 

বর্তমানে এই কোম্পানিতে কাজ করেন ৪০০ জন কর্মচারী। প্রত্যেকেই সমাজে প্রান্তিক। কেউ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার, কেউ বা দুঃস্থ পরিবার থেকে এসেছেন। প্রত্যেকেই বোল্লান্তে ভর করে নতুন করে গড়ে নিচ্ছেন জীবন। 

৬৫ মিলিয়ন ডলার বাজারমূল্যের কোম্পানিটি বিনিয়োগকারী হিসাবে পেয়েছে রতন টাটাকে। 

আরও পড়ুন
সাইন ল্যাঙ্গুয়েজকে লিখিত রূপ দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আবিষ্কার ভারতীয় তরুণীর

আর ৩০ বছর বয়সী শ্রীকান্ত বোল্লা পেয়েছেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের থেকে ইয়ং লিডারের সম্মান। এমনকি তাঁর জীবন নিয়ে একটি হিন্দি ছবি হবে বলে শোনা যাচ্ছে। যেখানে বোল্লার ভূমিকায় ভাবা হচ্ছে রাজকুমার রাওকে। 

আরও পড়ুন
লরিয়াস স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড ব্রেকথ্রু সম্মানের জন্য প্রথম ভারতীয় হিসাবে মনোনয়ন নীরজ চোপড়ার

২০১৯ সালেই প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, ভারত থেকে সিঙ্গল ইউজ প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার নির্মূল করবেন। বর্তমান বছরের গ্রীষ্ম থেকেই লাগু হতে পারে সিঙ্গল-ইউজ প্ল্যাস্টিকের উপর নিষেধাজ্ঞা। কারণ, সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের মতে গত পাঁচ বছরে মাথাপিছু প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এ নিয়ে অবশ্য দানা বেঁধেছে বিতর্কও। অনেকেই প্ল্যাস্টিকের বিকল্প না পাওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞার উপর ক্ষোভ উজাড় করে দিচ্ছেন। সেখানে বোল্লা বলছেন, পরিবেশবান্ধব পলিমার দিয়ে প্ল্যাস্টিক তৈরি করার কথা। 

আরও পড়ুন
হাসপাতালেই ছেড়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা, প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে আজ 'সেলিব্রিটি' গ্যাবে

দূষণের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে বোল্লান্ত একা নয়। রয়েছে, দিল্লির ইকোওয়ার এবং বেঙ্গালুরুর বায়োগ্রিন। এই তিনটি স্টার্টআপ কোম্পানি, প্লাস্টিকের বিকল্প খোঁজার লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্যপূরণ হবে কিনা, বলবে ভবিষ্যত।

Powered by Froala Editor

More From Author See More