অভিবাসী শ্রমিকদের গায়ে ছেটানো হল জীবাণুনাশক, অমানবিক দৃশ্য উত্তরপ্রদেশে

লকডাউনের জেরে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের বন্ধ হয়েছিল উপার্জন। বাড়ির ফেরার জন্য পর্যাপ্ত যানবাহনও ছিল না। নিজেদের গ্রামে হেঁটে ফিরেছেন অনেকে। শনিবার দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশ ফেরার সময়, পথেই প্রাণ যায় বছর ৩৮ এর এক শ্রমিকের। হেঁটে ফিরছিলেন ২০০ কিলোমিটারের পথ। যারা ফিরতে পারলেন, তাঁদের সামনে নতুন বিপত্তি! কীটনাশক। হ্যাঁ, উত্তরপ্রদেশের বরেলি জেলায় এমনটাই হল। ঘরে ফেরা অভিবাসী শ্রমিকদের বাধ্য করা হল জীবাণুনাশক মিশ্রিত জলে জীবাণুমুক্ত হতে। বাধ্য করলেন সরকারি আধিকারিকরা।

আরও পড়ুন
হাসপাতালে স্থানাভাব, মেঝেতে শুয়ে করোনা-আক্রান্তরা – ভয়াবহ দৃশ্য স্পেনে

এই ঘটনার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামনে এসেছে। ভিডিওটি লক্ষ্ণৌ থেকে ২৭০ কিমি দূরে বরেলি জেলায়। ভিডিওতে এক আধিকারিককে স্পষ্ট বলতে শোনা যায়, সবাইকে চোখ বন্ধ করতে। তারপরই রাস্তার ধারে বসে থেকে শ্রমিক এবং শিশুদের গায়ে হোর্স পাইপে করে ছড়িয়ে দেওয়া হল জীবাণুনাশকের দ্রবণ। জ্বলতে থাকে চোখ। চিৎকার করে ওঠেন অনেকেই। আর এই দৃশ্যের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল পুলিশকে।

https://www.facebook.com/100008141356139/videos/2599407190340634/

আরও পড়ুন
সেরে উঠেও রেহাই নেই চিনে, ১৪% মানুষ দ্বিতীয়বার আক্রান্ত করোনায়

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরে জেলা প্রশাসনের এক দাপ্তরিক দাবি করেছেন, এমন কোনো ডিসইনফেক্টেন্ট ছিলই না ওই জলে, ছিল ক্লোরিনের দ্রবণ। তিনি আরও বলেন প্রত্যেককে জীবাণুমুক্ত করাই ছিল প্রথম কাজ। কিন্তু সংখ্যা এত বেশি বলেই এই পদ্ধতি নিতে হয়েছে তাঁদের।

আরও পড়ুন
করোনাই শেষ নয়, আরও ভয়ংকর মহামারী আসতে চলেছে, আশঙ্কা পরিবেশবিদদের

এই ঘটনা চূড়ান্ত অমানবিকতার নিদর্শন রাখল। ভিডিও সামনে আসার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তীব্র সমালোচনার মুখে, জেলা শাসক বিষয়টি তদারকি করে দেখেন। আশ্বাস দেন, এই ঘটনায় আক্রান্ত তাঁদের চিকিৎসার কোনো ত্রুটি থাকবে না। জানান, যে সকল সিভিক পুলিশ এবং দমকলকর্মীরা যুক্ত ছিলেন এই কাজে, তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে পদক্ষেপ। নির্দেশ ছিল কেবলমাত্র বাসে এই স্প্রে করার।

আরও পড়ুন
খাবারের জন্য লম্বা লাইন, কেউ বাড়ি ফিরছেন পায়ে হেঁটেই; ‘অসহায়’ দিল্লির ছবি

করোনার এই যুদ্ধে সব থেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে হাজার হাজার অভিবাসী মানুষদের। প্রতিদিনের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে অসহায়তা। আবার কোনও অজানা চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে কিনা, সেই নিয়েই অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষেরা।