ভারতেই তৈরি হল করোনার প্রতিষেধক, অপেক্ষা শুধু চূড়ান্ত ফলাফলের

প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ছে সংক্রমণ, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। আর এই আতঙ্কের পরিবেশেই চলেছে গবেষণা। অবশেষে একের পর এক গবেষণায় সাফল্য আসতে শুরু করেছে। আর এবার সম্ভবত করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধকও তৈরি হয়ে গেল। অপেক্ষা শুধুমাত্র কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার। আর এই বৈপ্লবিক আবিষ্কারের কৃতিত্ব অবশ্যই ভারতের। হায়দ্রাবাদের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা 'ভারত বায়োটেক'এর ল্যাবরেটরিতেই আবিষ্কার হল এই ভ্যাকসিন। প্রাথমিক পরীক্ষার পর নমুনা পাঠানো হয়েছে আমেরিকার উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখন চূড়ান্ত ফলাফলের দিকেই তাকিয়ে সবাই।

আরও পড়ুন
একটি সিলিন্ডার থেকেই ১২ জনকে দেওয়া যাবে অক্সিজেন, আবিষ্কার ইন্ডিয়ান নেভির

করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক তৈরির জন্য গবেষণা শুরু হয়েছিল মার্চ মাসের গোড়াতেই। ভারত বায়োটকের সঙ্গে এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এবং আমেরিকার একটি টিকা প্রস্তুতকারক 'ফ্লু-জেন'। নতুন এই আবিষ্কারের মূল উপাদান কিন্তু ফ্লু-জেন আবিষ্কৃত একটি পুরনো ভ্যাকসিন, এম২এসআর। এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের একটি দুর্বল জিন। সংক্রমণের ব্যাপারে দুর্বল হলেও, অন্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইমিউনিটি তৈরিতে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা নেয় এই জিনটি। এর আগে সার্স রোগের ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিনটির কার্যকর ভূমিকা দেখা গিয়েছে। ভারতে সোয়াইন ফ্লু মোকাবিলাতেও এই টিকাই ব্যবহার করা হয়েছিল। ভারত বায়োটেকের গবেষকদের দাবি, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা নেবে এই জিন।

আরও পড়ুন
তরুণদের বাঁচাতে ভেন্টিলেটর প্রত্যাখ্যান, মৃত্যুতে ঢলে পড়লেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা

এই টিকার কার্যকারিতার বিষয়ে হায়দ্রাবাদের নিজস্ব পরীক্ষাগারেই প্রাথমিক পরীক্ষার পর কোম্পানি মোটামুটি নিশ্চিত। এখন উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে নমুনা পাঠানো হয়েছে, বিভিন্ন প্রাণীর উপর এই ওষুধের কোনো খারাপ প্রভাব পড়ে কিনা সেবিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলেই নমুনা প্রস্তুতির জন্য উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির বিজনেস ডেভেলাপমেন্ট অধিকর্তা রাচেস এলা। তবে এই কাজে আরও কয়েক মাস লেগে যাবে। সমস্ত পরীক্ষার ফল অনুকূল হলে এই বছর অক্টোবর মাসের শেষেই উৎপাদন শুরু করা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস যখন রীতিমতো মহামারীর রূপ নিয়ে হাজির, তখনও চিকিৎসকদের কাছে কোনো উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই বলেই জানানো হয়েছিল। আর মহামারীর রুখতে ওষুধের চেয়েও বেশি দরকার প্রতিষেধক। এখন ভারত বায়োটকের এই আবিষ্কার ছাড়পত্র পায় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই। আর এই মারাত্মক পৃথিবীব্যাপী মহামারীর বিরুদ্ধে সাফল্যের দাবিদার যে আমাদেরই দেশ, সেটা গর্বের বিষয় বৈকি!