সাহেবদের হারিয়ে হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন, বাঙালি কি মনে রেখেছে গোবর গোহ-কে?

একটা হিসেব কষে দেখছিলাম, বাঙালি তার আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে কাদের পেয়েছে? নগেন্দ্র প্রসাদ সর্বাধিকারী ১৮৭৭ সালে ফুটবল খেলাটা নিয়ে এলেন বঙ্গে, তারপর ফুটবলে হিসেব করলে চুণী-পিকে-কে পেল বাঙালি প্রায় পঞ্চাশ বছর পর। সেই সময়ে আরেকজন বাঙালির নাম এঁদের সঙ্গেই উচ্চারিত হয়ে থাকে। তিনি পঙ্কজ রায়, বিনু মাকড়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে একটা বিশ্বরেকর্ডের সৌজন্যে। ক্রিকেট আর ফুটবল বাঙালি নিতে শুরু করল ঊনিশ শতকের শেষভাগ থেকে। এরপর পিকে-চুণী-পঙ্কজ, তারপর কিছুটা আন্তর্জাতিক সাফল্য এল অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের হাত ধরে। মিহির সেন, আরতি সাহা, আর শতকের শেষভাগে বাঙালি আবেগে গ্ল্যামারের ঝড় তুলে বাঙালির রত্ন সিংহাসনে বসে পড়লেন সৌরভ গাঙ্গুলি। 

কিন্তু এই কি বাঙালির ক্রীড়া আইকনদের স্থূল বৃত্ত? নয় তো! ইতিহাস ঘাটতে ঘাঁটতে উঠে আসে আরও অজস্র নাম। বিস্মৃতপ্রায় বাঙালির ইতিহাসে এ নাম নিয়ে চর্চা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সমাজ-রাজনীতি আর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ত্রিভূজের তিন বিন্দুতে দাঁড়িয়ে এই আইকনেরা আজ কোথায়? কোথায় তাঁদের সেই সব কীর্তির ধূসর প্রস্তরফলক? খোদাই করা নামগুলোয় শান দিল না তো কেউ বহুদিন। সেই আত্মবিস্মৃতি বাঙালির স্বভাববিরুদ্ধ নয় একেবারেই।

ধরা যাক উত্তর কলকাতার ১৯ নম্বর গোয়াবাগান স্ট্রিট, চট করে এমন একটা অদ্ভুত ঠিকানা বললে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে শতকরা নব্বইভাগ বাঙালিই আর ঠাহর করে উঠতে পারবেন না কিছু।  অথচ পঞ্চাশ বছর আগে যদি ফিরে যাই, কোনো এক ছুটির সকালে এই গোয়াবাগান স্ট্রিটের সামনে দিয়ে গেলে ভেসে আসত পালোয়ানদের দরাজ গলা, তেল দলাই-এর শব্দ। সেই টালির ১৯ নম্বর চৌচালার নিচে একটা চেয়ার পেতে বসে আছেন বৃদ্ধ। চামড়ায় বয়সের ভাঁজ পড়লেও বুকের ছাতি আর হাতের গুলির দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তিনি তো যে সে মানুষ নন। কে তিনি?

১৯১৩ সাল। বঙ্গভঙ্গের রেশ তখন ফিকে, স্বদেশি আন্দোলনের আবহের মধ্যেই রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির খবর ভেসে আসছে টেলিগ্রামে। কলকাতার অলিতে গলিতে তখন একটু একটু করে মাথাচাড়া দিচ্ছে ফুটবল, মোহনবাগান - এই একটা নামই বারুদের মতো ছড়াচ্ছে সেপিয়া কলকাতায়। সদ্য কল্লোলিনী কলকাতা থেকে তখন রাজধানী সরিয়ে দিল্লিতে নিয়ে গেছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। বঙ্গভঙ্গ রদের পর বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি নিয়ে টালমাটাল চলছে কোম্পানির মধ্যেই, পাল্লা দিয়ে চলছে ব্রিটিশ অত্যাচার। বিপ্লবীদের আস্তানা হয়ে উঠছে উত্তর কলকাতার সভা-সমিতিগুলো। ব্রিটিশ টমটম গাড়ির শব্দ থেকে বহু দূরে তখন ঐ আখড়ার বৃদ্ধটি দাঁড়িয়ে রয়েছেন কয়েক হাজার মাইল দূরে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় স্কটিশ দৈত্য জিমি এসানের সামনে। তখন তাঁর বয়স মাত্র একুশ।

হ্যাঁ, ইনিই প্রথম বাঙালি ক্রীড়ার সুপারস্টার গোবর গোহ, কিংবদন্তী কুস্তিগির, যার পোশাকি নাম যতীন্দ্রচরণ গুহ।

জিমি এসানকে চিৎ করে ছিটকে দিয়েছিলেন তিনি সেই লড়াইতে। ভেবে দেখলে অবাক হতে হয় যে, ব্রিটিশ অত্যাচারে তখন জর্জরিত বাংলা সেই ব্রিটিশ মুলুকে গিয়েই হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরছেন এক বাঙালি কুস্তিগির। সেই লড়াই জিতে তিনি পেলেন ব্রিটিশ এম্পায়ার হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নের খেতাব। আরও আশ্চর্যের তিনিই প্রথম প্রাচ্যের কুস্তিগির যিনি এ সমান অর্জন করেন মাত্র ১৮ বছর বয়সে।

১৯২১ সালের ২৩ আগস্ট মার্কিন মুলুকের সানফ্রানসিসকোয় বিশ্ব কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপে গোবর গোহ আবার প্রথম এশীয় কুস্তিগির হিসেবে ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হলেন। সেই ঐতিহাসিক লড়াইয়ে হারালেন জার্মান কুস্তিগির আড স্যাল্টারকে। এহেন মানুষটিকে নিয়েই সে-সময় আমেরিকায় মস্ত স্টোরি বেরোল ক্যানসাস সিটি পোস্ট পত্রিকায় এই হেডিং-সহ: “Invasion of ‘Hindu Menace’ breeds fear among matmen.” হিন্দু আক্রমণে কুস্তিগিররা থরহরি কম্প। এখনো ভাবলে অবাক লাগে, এই মানের আন্তর্জাতিক ক্রীড়াব্যক্তিত্বকে বাঙালি বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে ফেলতে চলেছে প্রায়। উনিশ শতকের শেষ থেকে বিংশ শতকের প্রথমভাগ অবধি যদি ১৯১১ মোহনবাগানের আই এফ এ শিল্ডজয় একটা মাইলফলক হয়, তাহলে তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয় ১৯১৮ আর ১৯২১ সালে গোবর গোহের এই দুই মাইলস্টোন।

গোবর গোহ কে? কুস্তির ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় আঠারো শতকের শুরুর দিকে ব্রজরাম গোহের নাম। ব্রজরামরা অবিভক্ত বাংলার জমিদার ছিলেন।

ব্রজরাম গোহ (১৭৬৩-১৮০০) বেশি দিন বাঁচেননি, কিন্তু তাঁর বংশধরেরা জমিদারি ও সম্পদ সুরক্ষিত রেখেছিলেন। বিশেষত পুত্র শিবচরণও (১৭৯৩-১৮৭৪) মুৎসুদ্দির কাজে পর্যাপ্ত অর্থ করেছিলেন। এই শিবচরণের নাতি অম্বিকাচরণের (১৮৪২-১৯০১) হাত ধরেই ডন-কুস্তির নেশা ঢোকে গোহ পরিবারে। নাতির নতুন নেশায় শিবচরণের প্রত্যক্ষ প্রশ্রয় ও বিপুল অর্থব্যয় ডন-কুস্তিকে কালে কালে সম্ভ্রান্ত গোহ বাড়ির এক কালচারে পরিণত করে। একথা হয়তো কারও-ই অজ্ঞাত নয় যে, কলকাতায় ফুটবলের অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয় খেলা ছিল কুস্তি আর কবাডি।

এই আবহেই অম্বিকাচরণ কলকাতায় গোহ ঘরানার কুস্তি চালু করার নেশায় উন্মাদ হয়ে উঠলেন। সেই সময় বাঙালি কুস্তির আখড়া হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও হল গোহদের আখড়া। কলকাতার দর্জিপাড়া, ৬৫ মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটে চল্লিশটি গরু ও তিরিশটি ছাগলের পাশেই নরম মাটির আখড়া গড়া হল। শিক্ষার্থীদের জন্য বড়ো গেলাসে দুধের ব্যবস্থাও করেছিলেন অম্বিকাচরণ। এই আখড়াতে গোবরের প্রথম দিন থেকেই সকলে বুঝেছিলেন এই ছেলে একদিন ইতিহাসে নাম তুলবে। যতীন্দ্রচরণের ছোটোবেলায় তাঁর নাদুসনুদুস চেহারা দেখে পিতামহ অম্বুবাবু তাঁকে রসিকতা করে 'গোবরের ড্যালা' বলেছিলেন। সেই থেকে তার ডাকনাম হয় গোবর। পিতামহের রসিকতায় গোবরের জেদ চেপে যায়। তিনি পিতামহের কাছেই প্রথমিক অনুশীলন শুরু করেন। গোবরের কাকা ক্ষেতুবাবু গোবরকে তৈরি করতে গিয়ে দেখেন যে, পনেরো বছর বয়সেই দু’ঘণ্টার কুস্তিতে ওঁর কোনো দমই খরচ হয় না। এই ক্ষেতুবাবু বা ক্ষেত্র চরণ গোহ আবার স্বামী বিবেকানন্দের কুস্তি শিক্ষাগুরুও ছিলেন বটে।

১৯১০ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে গোবর পেশাদার কুস্তিগির হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন, এরপর ১৯১২ সাল থেকেই গোবর নিয়মিত বিলেতে লড়াই শুরু করলেন। আমাদের মনে রাখতে হবে সেই সময়ে দাঁড়িয়ে পরাধীন ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে যে গুটিকয়েক বাঙালি আন্তর্জাতিক স্তরে যায়গা করার ব্যাপারে অগ্রণী ছিলেন, গোবর তাঁদের অন্যতম। তাঁর আগে নর্মান প্রিচার্ড বলে এই কলকাতারই একজন ১৯০০ সালের প্যারিস অলিম্পিক থেকে পদক এনেছিলেন, সে কথা প্রায় জানতেনই না কেউ যদি না সাংবাদিক অজয় বসু এই তথ্য তুলে আনতেন। তবে সেখানে তাঁর ন্যাশানালিটিতে পরাধীনভারতের নাম হিসেবে লেখা হয়েছিল - ‘ইস্ট ইন্ডিজ’!- সে নিয়ে আলোচনাও হবে পরবর্তী কোনো অধ্যায়ে।

১৯১২ সাল। সে বছরই লন্ডনের জন বুল সোসাইটি কুস্তির এক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে। সেখানে বিশ্বের সমস্ত নামকরা কুস্তিগিরদের আমন্ত্রণ করা হয়। ব্রিটিশ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন গামা পালোয়ান ও গোবর গোহ। সেবারের ইউরোপ যাত্রাকালে গোবর ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও ইতালিতে বিভিন্ন কুস্তিগিরদের সঙ্গে লড়েন। গোবর দ্বিতীয়বার ইউরোপ যাত্রা করেন ১৯১২ সালে। এই যাত্রায় গোবর প্যারিসে একটি কুস্তি প্রতিযোগিতায় বিশ্বের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হেভিওয়েট বিশ্বচ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে লড়েন। এর পরে তিনি স্কটল্যান্ডের সেরা কুস্তিগির ক্যাম্পবেলকে পরাস্ত করেন। তার পর তিনি লড়েন স্কটল্যান্ডের আর এক বিখ্যাত কুস্তিগির জিমি এসনের বিরুদ্ধে। কুস্তির পালাতে এসন সর্বক্ষণ বেআইনিভাবে মুষ্টি চালনা করা সত্ত্বেও গোবর এসনকে ভূপতিত করতে সমর্থ হন। যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ১৯১৫ সালে দেশে ফিরে আসেন। 

এই তিন বছরেই সারাবিশ্বের বা মূলত পাশ্চাত্য দেশগুলির কাছে বিস্ময় রেসলার হয়ে যান গোবর ওরফে যতীন্দ্রচরণ। দেশে ফিরেই তিনি দ্বিগুণ উদ্যমে নিজের কৌশল বাড়ানোর দিকে নজর দিলেন। তিনি ভারতীয় কুস্তির রীতিতে বহু নতুন প্যাঁচের উদ্ভাবন করেন এই সময়টাতে। তার উদ্ভাবিত ধোঁকা, টিব্বি, গাধানেট, ঢাক, টাং, পাট, ধোবা পাট, কুল্লা ইত্যাদি ভারতীয় কুস্তি রীতিতে সংযোজিত হয়। তার সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি হল রদ্দা। এই সময়ে কাঁধের আর কোমরের জোর বাড়াতে গোবর ১৬০ পাউন্ডের ভারী পাথর গলায় ঝুলিয়ে ট্রেনিং করতেন। তবে সবচেয়ে মজার ছিল গোবরের ভোজনবিলাস। কথিত ছিল তিনি খাবারের সঙ্গে সোনা আর রুপোর গুঁড়ো মিশিয়ে খেতেন গায়ের জোর বাড়ানোর জন্য। এ-নিয়ে আবার পরে এক যুবতী মার্কিন কুস্তি বিশেষজ্ঞ লোরি প্র্যাটকে গোবরের পক্ষ নিয়ে কলম ধরতে হল। গোবর-লুইস লড়াইয়ের আগে, ১৯২১ সালে। মার্কিন পত্রিকায় লেখা হল এক বাঙালি কুস্তিগিরকে নিয়ে, যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় -

‘গোবর কোনো ভাঁওতা নয়। শুধু সোনার গুঁড়োর খেল নয়। ওঁর আসল শক্তি শ্বাস নিয়ন্ত্রণে।’

১৯২১ সালে গোবর জিতলেন সেই ঐতিহাসিক বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ। সদ্য খেতাব হারানো মার্কিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এড ‘স্ট্র্যাংগলার’ লুইসের সঙ্গে গোবরের লড়াইয়ের আগে দেশ জুড়ে একটা তুমুল উত্তেজনা। তত দিনে অপরাজিত গোবরকে নিয়ে একটা আতঙ্কই প্রায় ছড়িয়ে গেছে দঙ্গল মহলে।

সে-লড়াইয়ে গোবর পা ধরে লুইসকে এক ঘণ্টার মধ্যে আছড়ে ফেলেন রিংয়ে। তার পর দুটো কাঁধ চেপে ধরলেন জমিতে। একেবারে গোহ ঘরানার কায়দার ম্যাজিক দেখল বিশ্ব। গোটা লড়াই ধরে গোবরই আগ্রাসী ছিলেন, এবং যে-সাবলীল কেতায় তিনি লুইসকে পা ধরে লটকালেন তা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সিবিস্কোর প্রয়োগ করা টো-হোল্ড প্যাঁচের চেয়েও চটকদার ছিল। ওই টো-হোল্ডেই কয়েক মাস আগে লুইসকে কাত করে বিশ্ব খেতাব জিতে নিয়েছিলেন সিবিস্কো। এবং সবচেয়ে মজার হল, এই শক্তিশালী সিবিস্কোকেও হারতে হয়েছিল গোবরের কাছে!

গোবর গোহ যে কী মাপের কুস্তিগির, তা আজ হয়তো সত্যিই নতুন প্রজন্মের কাছে অকল্পনীয়। আন্তর্জাতিক সাফল্য কেবল ছাপা হরফে তাঁর নজির বুকে আগলে রেখেছে আজ। এই দৈত্যাকার বাঙালি কুস্তিগিরের নাম অনেক বাঙালিরই অজ্ঞাত আজ, অথচ যতীন্দ্রচরণ ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন আদ্যোপান্ত বাঙালিয়ানার ধারক। ধুতি-পাঞ্জাবি-শাল ছাড়া যেতেন না কোথাও। এত আগ্রাসী কুস্তিগির এতটাই বিনয়ী ছিলেন যে ব্যক্তিজীবনে তাঁকে দেখে বিস্মিত হতেন অনেকেই।

গোবরবাবুর আবাস থেকে সন্ধ্যার দিকে ভেসে আসত সেতারের সুর। সকলে চমকে গিয়েছিলেন একদিন এই দৃশ্য দেখে। কুস্তি করেও যে সেতার বাজিয়ে মানুষকে আনন্দ দেওয়া যায়, তা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন গোবর গোহ। কুস্তি ছাড়া সেতারের ভীষণ শখ ছিল তাঁর। সেই ঈশ্বর মিল লেন, যা গোবরবাবুর আখরা থেকে দুটো গলি পরেই, সেখানে ছিল কিংবদন্তি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর বাড়ি। সেই পুরনো কলকাতায় রোববারের সকালে গোবরবাবুর আখড়ায় আড্ডা দিতে আসতেন বন্ধু সত্যেন্দ্রনাথ। অবসরের পর নিয়মিত নিজের শিক্ষা প্রদান চালিয়ে যাচ্ছিলেন গোবর গোহ। তিনি মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের পুরনো আখড়াটি নিয়ে আসেন হেদুয়া পার্কের কাছে।

সেই এক অধ্যায়ের অবসান হল ১৯৭২ সালে। গোবরবাবুর শেষ জীবনে আক্ষেপ ছিল, এই খেলাটার হাল আর সেভাবে ধরার মতো কাউকে পেলেন না তিনি। তাই হয়তো ক্রিকেট আর ফুটবলের জৌলুসের অনেকদূরে কুস্তীর শেষ ঘ্রাণটুকু বুকে নিয়েই চিরতরে হারিয়ে গেলেন গোবর গোহ।

আমাদেরও তাঁকে কিছু ফিরিয়ে দেবার সামর্থ্য ক্ষীণ হয়ে গেল দিনে দিনে...

Powered by Froala Editor