ডায়াবেটিস চিকিৎসায় বিপ্লব এনে বিশ্বসেরা এসএসকেএম-এর ডাঃ সুজয় ঘোষ

আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিকাল এন্ডোক্রনোলজি। চিকিৎসাজগতের গবেষণার নিরিখে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা হিসাবেই পরিগণিত হয় এই মার্কিন প্রতিষ্ঠান। এবার এই সংস্থাই বিরল সম্মাননা জানাল এক বাঙালি চিকিৎসককে। ডায়াবেটিস এবং অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবার বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক হিসাবে এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ সুজয় ঘোষকেই বেছে নিয়েছেন তাঁরা।

সব মিলিয়ে বিশ্বের ১৯১টি দেশের সেরা এন্ডোক্রনোলজিস্টদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছিল মার্কিন সংস্থাটি। তারপর গবেষণা ও কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে সেরার সম্মাননা দেওয়া হয় ডাঃ সুজয় ঘোষকে। এর আগে একমাত্র ভারতীয় হিসাবে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন মুম্বাইয়ের চিকিৎসক শশাঙ্ক যোশী। এমনকি গোটা এশিয়ার মধ্যে এই বিরল সম্মাননা রয়েছে মাত্র ৪ জন চিকিৎসকের ঝুলিতে।

জন্ম বেলেঘাটায়। ছোট থেকে কলকাতা শহরেই বেড়ে ওঠে প্রথিতযশা এই বাঙালি চিকিৎসকের। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশভ্রমণ। যুক্তরাজ্যের এমআরসিপি ইনস্টিটিউট থেকে এন্ডোক্রনোলজি ও মেটাবলিজম নিয়ে বিশেষজ্ঞের ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তবে বিদেশে মোটা মাইনের চাকরির সুযোগ থাকলেও, ভারতে ফিরে আসেন সুজয়। যোগদান করেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই কর্মরত তিনি। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন অধ্যাপনার কাজও। 

বিগত কয়েক বছরে এন্ডোক্রনোলজি এবং ডায়েবেটিসের চিকিৎসার জন্য একাধিক জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ নিয়েছেন ডাঃ সুজয় ঘোষ। তাঁর হাত ধরেই গড়ে উঠেছে পেডিয়াট্রিক ডায়াবেটিস ক্লিনিক, প্রেগন্যান্সি ডায়াবেটিক ক্লিনিক, থাইরয়েড ক্লিনিক, কিডনি ডিজিজ ক্লিনিকের মতো স্পেশালাইজড পরিষেবা বিভাগ। আগামীতে এসএসকেএম হাসপাতালে খুলতে চলেছে মেটাবলিজম এবং ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউট। সেই প্রতিষ্ঠান তৈরির পিছনেও অন্যতম ভূমিকা রয়েছে এই বাঙালি চিকিৎসকের। 

আরও পড়ুন
৫৪ বছরের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় হিসাবে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পুরস্কার বঙ্গতনয়ার

তবে আরও বৃহত্তর এক লক্ষ্যকে সামনে রেখেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বজয়ী বঙ্গসন্তান। তা হল শিশুদের ডায়াবেটিস চিকিৎসা। বর্তমানে বহু শিশুই আক্রান্ত হচ্ছে ডায়াবেটিসে। কিন্তু তার জন্য চিকিৎসার পরিকাঠামো তো দূরের কথা, ন্যূনতম পরিসংখ্যানটুকুও নেই সরকারের কাছে। এই সমস্যার সমাধান করতেই এগিয়ে এসেছেন তিনি। রাজ্য সরকারের সহায়তায় রাজ্যের ৫টি জেলায় খুলতে চলেছেন শিশুদের জন্য বিশেষ পেডিয়াট্রিক বিভাগ। আর সেই প্রকল্প সফল হলে আগামীতে কেন্দ্রের কাছেও দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। যা বদলে দিতে পারে গোটা দেশের চেহারাই। আর আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্তির পর সেই দায়িত্ব আরও খানিকটা বেড়ে গেল বলেই মনে করছেন ডাঃ সুজয় ঘোষ…

আরও পড়ুন
হ্যাক হতে পারে ডিজিটাল পেসমেকারও! আশঙ্কায় চিকিৎসক থেকে ইঞ্জিনিয়াররা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
প্রিন্স ডায়নার নামাঙ্কিত পুরস্কার পাচ্ছেন কলকাতার তরুণী