পশ্চিমবঙ্গের ৯-১০টি এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা সরকারের

চলছে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে আপ্রাণ লড়াই। আর সেই জন্যই দেশজুড়ে লকডাউন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা ২১ দিনের মেয়াদ শেষ হয়ে এল বলে। এখন লকডাউন আরও দীর্ঘায়িত হবে কিনা, সেটাই আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে সর্বস্তরে। ইতিমধ্যেই ওড়িশা জানিয়েছে, সেখানে লকডাউন চলবে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত। এবার লকডাউনের ব্যাপারে মুখ খুলল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।

একদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সাতটি স্থানে সর্বাধিক করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা গেছে। শুক্রবার চিফ সেক্রেটারি, রাজীব সিনহা জানালেন, ওই জায়গাগুলি নিয়ে মোট ৯-১০টি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত জায়গাকে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করেছে রাজ্য। তার মধ্যে কলকাতার এবং হাওড়ার একটি করে অঞ্চলও রয়েছে। তবে কোনো বিশেষ জায়গার নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে পরীক্ষা করানো হয়েছে মোট ২,০৯৫ জন রোগীর নমুনা। তার মধ্যে কোভিড-১৯ এর টেস্ট পজিটিভ এসেছে ৮৯ জনের। তার ভিত্তিতেই চিহ্নিত করা হয়েছে হটস্পটগুলিকে। অনির্দিষ্টকালের জন্য পুরোপুরি লকডাউন চলবে ওই জায়গাগুলিতে, এমনটাই জানান চিফ সেক্রেটারি। ওই জায়গাগুলিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ৫-৬ কিলোমিটারের ক্লাস্টার। বাইরে থেকে এলাকায় ঢোকা বা বেরোনো তো পুরোপুরি নিষিদ্ধই, সঙ্গে বন্ধ থাকবে সমস্ত পরিষেবা। বাড়ি থেকে না বেরোনোর, কড়া নির্দেশ জারি হবে ওই স্থানগুলিতে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সমস্যা হবে না কোনো। সরকারি আধিকারিকেরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবেন খাদ্যদ্রব্য ও অন্যান্য সামগ্রী।

রাজীব সিনহা এদিন জানিয়ে দেন, কিছু ডাক্তারকে নিয়ে গঠিত বিশেষ কমিটি ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা প্রকাশ করলে, নেওয়া হবে কঠিন ব্যবস্থা। এমনকি কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন ও সিভিক সংস্থাগুলিকেও মেনে চলতে হবে এই নির্দেশ। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই কেএমসি’র প্রকাশ করা একটি ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে পড়েছিল। তৈরি হয়েছিল চাঞ্চল্য। তাতে উল্লেখ ছিল, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ১০। কার্যত, সেই প্রসঙ্গেই এই পদক্ষেপ।

তিনি বলেন, রাজ্য সরকার সব রকমভাবেই চেষ্টা করছে সংক্রমণ আটকানোর। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে আড়াই লক্ষ প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের। যার মধ্যে রয়েছে ১৮৮,৫০০টি এন-৯৫ মাস্ক এবং ৫৫৯,০০০ জোড়া গ্লাভস। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। তিনি রাজ্যবাসীকে অকারণে উদ্বিগ্ন না হতে অনুরোধ করেছেন বারবার। এখন হটস্পটগুলির নাম কবে প্রকাশ্য আসে, সেইদিকেই নজর সকলের।