৬ বছরের বন্দিদশা শেষ, মুক্তির পথে কুর্দিশ-ইরানিয়ান লেখক বেহরুজ বুখানি

দীর্ঘ ৬ বছর ধরে বন্দিদশায় কাটিয়ে অবশেষে মুক্তি পেতে চলেছেন কুর্দিশ-ইরানিয়ান সাংবাদিক-লেখক বেহরুজ বুখানি। গত বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ড সরকার জানিয়েছে, রিফিউজি হিসাবে তাঁকে সেদেশে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। আর ২৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার এমন এক দিন ছিল যেদিন একদিকে লেখকের ৩৭তম জন্মদিন, অন্যদিকে তাঁর ইরান ত্যাগের ৭ বছর। সব মিলিয়ে বুখানির জীবনে এ এক অদ্ভুত আনন্দের দিন তো বটেই।

৮০-র দশকের ইরান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জন্ম বেহরুজ বুখানির। আর সেই কারণেই হয়তো তাঁর লেখায় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের দুর্দশার কথা। এসবের জন্য অবশ্য বহু মানুষের চক্ষুশূল হতে হয়েছে তাঁকে। তারপর এল ২০১৩ সালের সেই দিন। একদল ইসলামিক মৌলবাদী তাঁর উপরে ক্ষেপে উঠলেন। তাঁর সংবাদপত্রের জনা দশেক সদস্যের উপর চলল উৎপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হল কয়েকজনকে। আর তাই বুখানি এবং তাঁর ১১ জন সহকর্মী মিলে দেশ ছাড়লেন। চলে পাড়ি দিলেন অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেখানেও আরেক বিপদের মুখে পড়তে হল তাঁদের।

অস্ট্রেলিয়া সরকার তখন আইন করেছে, নৌকো করে কেউ সেদেশে উপস্থিত হলে তাঁকে বন্দি করা হবে। বুখানিরা তখন সমুদ্রের বুকে থাকায় এই আইনের কথা জানতেন না। তাই অবশেষে বন্দিদশায় জীবন কাটতে শুরু করল তাঁদের। ঠাঁই হল পাপুয়া নিউগিনির ম্যানাস দ্বীপে। আর এখানেই তিনি লিখলেন ‘নো ফ্রেন্ড বাট দ্যা মাউন্টেনস’। আর এই লেখাই তাঁকে সারা পৃথিবীর কাছে পরিচিত করে তুলল।

গতবছর অস্ট্রেলিয়ার সেরা সাহিত্য পুরস্কার ‘ভিক্টোরিয়া প্রাইজ ফর লিটারেচার’ পায় বুখানির লেখা বই। আর তারপর থেকেই লেখকের মুক্তির দাবি ওঠে অস্ট্রেলিয়ায়। শেষ পর্যন্ত সেই দাবিতে সম্মতি জানাল নিউজিল্যান্ড সরকার। মুক্তির বিষয়ে আনন্দ প্রকাশ করেও বুখানি জানিয়েছেন, তাঁর মন পড়ে থাকবে ম্যানাস দ্বীপের অন্যান্য বন্দিদের কাছেই। তাঁদের মুক্তির দাবিতে কলম চালিয়ে যাবেন এর পরেও। মানুষের দুর্দশার কথা তুলে ধরাই তাঁর জীবনের ব্রত।

আরও পড়ুন
পদবির সঙ্গে অপশব্দ ‘চুতিয়া’র মিল, চাকরির আবেদনে নাকাল অসমের তরুণী!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে লড়াই মধ্যপ্রদেশের দুই তরুণীর, পেয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতিও