দূরত্ব মাত্র ১০০০ আলোকবর্ষ, পৃথিবীর নিকটতম ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা

অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী প্রতিটি ছায়াপথের মাঝে আছে এক ভয়ঙ্কর রাক্ষুসে অঞ্চল। যেখান থেকে কোনোকিছুই ফিরে আসে না। এমনকি সমস্ত আলোও শুষে নেয় এই অঞ্চল। তাই এর নাম ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর। নানা কল্পবিজ্ঞান কাহিনীতে বা মানুষের বিশ্বাসে এই ব্ল্যাক হোল সম্বন্ধে বিচিত্র ধারণার উপস্থিতি থাকলেও, বিজ্ঞানীদের মধ্যে এর অস্তিত্ব নিয়ে যথেষ্ট সংশয় ছিল। এমনকি গতবছর ইভেন্ট হরাইজন প্রকল্পের সৌজন্যে ব্ল্যাক হোলের ছবি দেখা গেলেও তার প্রকৃত চরিত্র সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের মধ্যে এখনও যথেষ্ট ধোঁয়াশা আছে। আর এর মধ্যেই সন্ধান পাওয়া গেল আরেকটি ব্ল্যাক হোলের। গবেষকদের মতে, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের ব্ল্যাক হোল। নাম, এইচআর ৬৮১৯। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১০০০ আলোকবর্ষ।

চিলিতে অবস্থিত ইউরোপিয়ান সাউথার্ন অবজারভেটরির লা-সিলা দূরবীন থেকে রাতের আকাশে হঠাৎ ধরা পড়ে এক অদ্ভুত দৃশ্য। দূরবীনে দেখা বস্তুটি আসলে কী, প্রথমে বুঝতে পারেননি কেউই। অবশেষে দেখা যায়, এটি একটি ব্ল্যাক হোল। এবং আরও আশ্চর্যের বিষয়, পৃথিবী থেকে এর দূরত্বও খুবই কম। বিজ্ঞানীদের এই অনুসন্ধান সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে অ্যাস্ট্রনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রফিজিক্স পত্রিকায়। স্বাভাবিকভাবেই এমন আবিষ্কারকে ঘিরে বিজ্ঞানীদের মধ্যে তো বটেই, সাধারণ মানুষের মধ্যেও উৎসাহের কমতি নেই।

ইএসও-র এই আবিষ্কারকে ঘিরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানী টমাস রিভিনিয়াস। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছিলেন, খালি চোখেও ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব বোঝা সম্ভব। আর এই আবিষ্কার তাঁর বক্তব্যকে প্রমাণ করলো বলেই বিশ্বাস তাঁর। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ব্ল্যাক হোলের যে সর্বগ্রাসী চরিত্রের কথা আমরা জানি, তার সঙ্গে এই এইচআর ৬৮১৯-এর চরিত্র ঠিক মেলে না। ব্রহ্মাণ্ডের বহু প্রাচীন বস্তুগুলির একটি এটি। ফলে আশেপাশের কোনোকিছুর সঙ্গেই তার আর প্রায় যোগাযোগ নেই। আর সেকারণেই কোনো আলো সেখান থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসে না। টমাসের কথা থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, এই ব্ল্যাক হোলকে ঘিরে আছে অনেক অজানা রহস্যের বাতাবরণ। মহাকাশের অনেক অজানা সূত্রের সন্ধান হয়তো পাওয়া যাবে এই আবিষ্কার থেকেই।

Latest News See More