কফিনবন্দি কয়েকশো মমি, সঙ্গে সর্পদেবীর প্রশস্তি; মিশরে আবিষ্কৃত রহস্যময় সমাধিক্ষেত্র

মিশর মানে পিরামিডের দেশ। মৃত্যুর পর মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ভেষজ ওষুধ মাখিয়ে তৈরি করা হত মমি। তারপর তাদের শায়িত করা হত পিরামিডের নিচে। কিন্তু সে তো ফ্যারাও বা রাজপরিবারের মানুষদের সমাধি। আর সেদেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা কী হত? শুনতে আশ্চর্য লাগলেও, সেদেশের প্রতিটি মানুষের মৃত্যুই ছিল একেকটি উৎসব। মিশরিয়রা মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের উপর গভীরভাবে আস্থাশীল ছিল। আর তাই প্রতিটা মৃত্যুর উদযাপনের জন্য ছিল দীর্ঘ রীতিনীতি।

বছর দুয়েক আগে কায়রো শহরের দক্ষিণে সাকারা অঞ্চলে পাওয়া যায় একটি সমাধিক্ষেত্র। এই সমাধিক্ষেত্রের নিচে পাওয়া যায় কফিনবন্দি কয়েকশো মমি। বলাই বাহুল্য, এই আবিষ্কার প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। এবং দীর্ঘ দুবছরের গবেষণার শেষে অধ্যাপক রমজান হোসেনের নেতৃত্বাধীন গবেষণা দলটি তার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সম্প্রতি। এই রহস্যময় স্থানটিকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি এবং বিবিসি।

গবেষকদের মতে প্রতিটি মৃতদেহের অন্ত্যেষ্টি ঘটেছিল মোটামুটি ২৬০০ বছর আগে। এর মধ্যে অনেক ধনী মানুষও যেমন আছেন, তেমনই গরীব মানুষও আছেন। একটি মমির মুখোশ রুপোর তৈরি। আবার এমন মমিও আছে যার কফিন তৈরি হয়েছে মাটি দিয়ে। তবে মমি তৈরির রীতি মেনে চলা হয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই। সমাধিস্থ করার আগে প্রত্যেকের নানা অঙ্গ তুলে নিয়ে রাখা হয়েছে পৃথক পৃথক পাত্রে।

তবে এর মধ্যেও একটি রহস্যের উত্তর দিতে পারেননি গবেষকরা। দেখা গিয়েছে একটি মমির সঙ্গে থাকা অঙ্গরক্ষক পাত্রের সংখ্যা ৬। অথচ সাধারণত ৪টি পাত্রে এইসব অঙ্গ রাখা হত। তাছাড়া এই সমাধির সঙ্গে কোনো অজানা ধর্মীয় গোষ্ঠীর যোগাযোগের সম্ভবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। মিশরীয়রা অনেক জীবজন্তুর আরাধনা করত। তবে সাপের দেবী নিউ শার বর্ণনা কোনো সমাধিক্ষেত্রে সাধারণত পাওয়া যায় না। অথচ এই সমাধিক্ষেত্রে নিউ শার বেশ কিছু প্রশস্তি পাওয়া গিয়েছে। ফলে এই আবিষ্কারকে ঘিরে এখনও দানা বাঁধছে বেশ কিছু রহস্য।

Latest News See More