আগামী ৫ বছরে বাল্যবিবাহের শিকার হতে পারে ৬ কোটি কিশোরী, জানাচ্ছে সমীক্ষা

মহামারী করোনার প্রভাবে বিপর্যস্ত সমাজের প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রই। কখনও তা সমাজকে পিছিয়ে দিচ্ছে বেশ কয়েক দশক। আর এই পরিস্থিতিতে বাল্যবিবাহের সংখ্যাও বাড়তে পারে অনেকটাই। এমনই তথ্য উঠে এল লন্ডনের একটি এনজিও-র সমীক্ষায়।

ইতিমধ্যেই ভারতের ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, বাল্যবিবাহের সংখ্যা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এদেশে। তবে শুধু ভারতেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ সহ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে এই প্রথা ভয়ঙ্কর চেহারা নিতে চলেছে। আর এর পিছনে মহামারী পরিস্থিতিকেই দায়ী করছে লন্ডনের সামাজিক সংস্থা ‘গার্লস নট ব্রাইড’। যেভাবে অর্থনৈতিক সংকট সারা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে, তাতে নানা ধরনের সামাজিক ব্যাধি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা অসম্ভব নয়। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এমনটাই মনে করছেন সংস্থার কর্ণধার ড. ফেইথ মাওয়াঙ্গি-পাওয়েল।

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ড. পাওয়েল জানিয়েছেন, ২৫ বছর ধরে ক্রমাগত সচেতনতা অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ফলে বাল্যবিবাহের সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আবারও সমাজ পিছনের দিকে হাঁটতে শুরু করেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে এখনও বছরে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ কিশোরীকে অপরিণত অবস্থাতেই বিয়ে দেওয়া হয়। আর এই মহামারী পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যে সংখ্যাটা আরও ৫ লক্ষ বেড়েছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৬ কোটি ১০ লক্ষ বাল্যবিবাহের শিকার হতে হবে বলেও সচেতন করেছে সংস্থাটি।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়াই এই সংকটের প্রধান কারণ। তাছাড়া দুর্বল অর্থনীতির কারণে অভিভাবকরা অনেক সময়েই মেয়েদের আগে বিয়ে দিতে চাইছেন। আর বাল্যবিবাহ যে শুধু অপরাধ তাই নয়, এটা একটা সামাজিক সমস্যা। বাল্যবিবাহের সঙ্গী হয়ে আসে মহিলাদের মধ্যে অবসাদ, শারীরিক সমস্যা এমনকি গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা। আর এই সমস্তকিছুর হাত থেকে সমাজকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে নীতি-নির্ধারকদেরই। তবে তার সঙ্গে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলাও ভীষণ জরুরি।

Powered by Froala Editor