শিক্ষার কোনো বয়স হয় না, স্কুলে ফিরে প্রমাণ করলেন ঝাড়খণ্ডের ৫৪ বছরের শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষার কোনো বয়স থাকে না। এই কথাটাই যেন আরেকবার প্রমাণ করলেন ঝারখণ্ডের শিক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মাহাতো। তিনি শুধু শিক্ষামন্ত্রীই নন, তিনি এখন একটি স্কুলের নবাগত এক ছাত্র। ১৯৯৫ সালে মেট্রিক পরীক্ষার পর স্কুল ছেড়েছিলেন। তারপর প্রায় ২৫ বছর পর আবারও স্কুলে ফিরলেন। এখন তাঁর বয়স ৫৪। সহপাঠীদের কারোর বয়স ১৮, কারোর ১৯। কিন্ত এর মধ্যে কোনো লজ্জা নেই তাঁর। বরং প্রত্যেকের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজেও প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে চান তিনি।

তবে প্রশ্ন উঠতে পারে, এতদিন পর হঠাৎ কেন স্কুলে ফিরলেন তিনি? জগন্নাথ মাহাতোর কথায়, তিনি যখন হেমন্ত সোরেন সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত হলেন, তখন অনেকেই অবজ্ঞা করেছেন। যাঁর নিজের কোনো প্রথাগত শিক্ষার অভিজ্ঞতা নেই তিনি কী করে শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করবেন? তাঁদের উত্তর দিতেই আবারও স্কুলজীবনে ফিরলেন তিনি। অবশ্য তিনি নিজে মনে করেন তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কখনোই তাঁর মন্ত্রিত্বের সামনে বাধা হতে পারে না। বরং তিনি নিজে সামনে থেকে দেখেছেন শিক্ষা ব্যবস্থার নানা সমস্যা। আর সেগুলোকেই বদলাতে চান তিনি। এই উদ্দেশ্যে প্রতিটা পঞ্চায়েতে মডেল স্কুল তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।

ছোটো থেকেই প্রবল অর্থ সংকটের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন জগন্নাথ মাহাতো। কিন্তু অর্থনীতিকে পড়াশুনোর সামনে বাধা বলে মনে করেন না তিনি। আসলে তখন পৃথক ঝারখণ্ড রাজ্যের দাবিতে রাজনৈতিক আন্দোলন ডেকে নিয়েছিল তাঁকে। অবশেষে সেই রাজ্য পৃথক হল। ঝারখণ্ডের উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ উন্নতির মুখ দেখছেন ক্রমশ। এর মধ্যেই ২০০৫ সালে তিনিই তৈরি করেছিলেন দেবী মাহাতো ইন্টার স্কুল। সম্প্রতি সেখানেই একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছেন তিনি। তবে একদিকে শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, অন্যদিকে একজন সাধারণ ছাত্র; দুদিক সমান তালে চালিয়ে যাওয়া সহজ কাজ নয়। জগন্নাথ মাহাতো কি এই চ্যালেঞ্জ জিততে পারবেন? সময়ই তার উত্তর দেবে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
শিক্ষাব্যবস্থায় বড়োসড়ো রদবদল, গুরুত্ব হারাচ্ছে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা; ফাঁক পড়বে আঞ্চলিক শিক্ষায়?