দু’হাজার বছরের পুরনো তাম্রপত্র, তাতেই রয়েছে গুপ্তধনের সন্ধান!

ইজরায়েলের মরুভূমিতে কামরান গুহাগুলি প্রত্নতাত্ত্বিকদের বিশেষ আকর্ষণের জায়গা। অন্যান্য অনেককিছুর মধ্যে তাঁদের বিশেষ মনোযোগের বিষয় 'ডেড সী স্ক্রল'গুলি, বিশেষত কামরানের বিখ্যাত তাম্রপত্র। মনে করা হয়, এই তাম্রপত্রে ৬৪টি জায়গার গুপ্তধনের একটি মানচিত্র আছে। আর গুপ্তধন মানে সামান্য কিছু নয়। সোনা রুপোর মতো মূল্যবান ধাতু ৪৬,০০০ দ্রব্য, যার বর্তমান বাজারমূল্য কিছু না হোক এক মিলিয়ন ডলারের বেশি।

তাম্রপত্রটি পাওয়ার পর থেকেই তাই স্বাভাবিক ভাবেই সাড়া পড়ে গেছে। কিন্তু এ-লিপির ভাষাও সহজ নয়। 'ডেড সী স স্ক্রলে'র অন্যান্য লিপির ভাষা যেখানে সাধারণ হিব্রু, সেখানে এই তাম্রপত্রের ভাষা মিসনায়িক হিব্রু। ফলে ষাট বছরের বেশি সময় ধরে 'গুপ্তধন' রহস্যের কোনো সমাধানই হয়নি।

১৯৫২ সালে কামরানের তিন নম্বর গুহা থেকে এই তাম্রপত্রটি আবিষ্কার করেন এক নৃতাত্বিক। আর তারপর থেকেই শোরগোল পড়ে যায়। পাঠোদ্ধারের জন্য বিশেষজ্ঞদের কমিটি তৈরি করা হয়। ১৯৫৫-৫৬ সালে তাম্রপত্রটি ২৩টি খণ্ডে ভাগ করে পাঠোদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু তাতে রহস্য যেন আরো ঘনিয়ে ওঠে। কেউ মনে করেন এটা মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন উপকথার কাহিনি অনুসরণ করে লেখা। আবার কেউ মনে করেন অন্য কোনো সাম্রাজ্য থেকে চুরি করে এনে কামরানের গুহায় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে তাম্রপত্রের ছবি ও খবর বিশ্বের নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

১৯৯৪-৯৬ সালে একটি ফরাসি সংস্থার তত্ত্বাবধানে তাম্রপত্রটির ছবি তোলা, এক্স রে ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তারপরেও এই তাম্রপত্রের সময়কাল সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা একমত হতে পারছেন না। আনুমানিক ২৫ থেকে ১৪০ সালের মধ্যে কোনো এক সময় এই লিপি খোদাই করা হয়েছিল। তবে একটা ব্যাপারে মোটামুটি সবাই একমত, এই লিপিতে ৬৪টি জায়গায় বিপুল পরিমাণ গুপ্তধনের উল্লেখ আছে। তার মধ্যে ৬৩টি জায়গায় সোনার ভাণ্ডার মজুত আছে।

গুপ্তধনের সন্ধান না পেলেও কামরানের তাম্রলিপি প্রচুর গল্পকাহিনির জন্ম দিয়েছে। ১৯৬৬ সালে লিওনেল ডেভিডসন লেখেন 'এ লং ওয়ে টু শিলও'। ২০০৬ সালে জোয়েল রোজেনবার্গ লেখেন একটি বিখ্যাত রাজনৈতিক কাহিনি। বর্তমানে জর্ডন মিউজিয়ামে প্রদর্শনীর জন্য রাখা আছে কামরানের বিখ্যাত তাম্রপত্র।