এক বছরে মৃত কয়েক লক্ষ সামুদ্রিক পাখি, নতুন রিপোর্টে চিন্তায় বিজ্ঞানীরা

বিগত বছরগুলোয় প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছে বিপুল সংখ্যক প্রাণী। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বললেন, বিপদ এখানেই থেমে যায়নি। প্রশান্ত মহাসাগরের কুখ্যাত হিটওয়েব ‘দ্য ব্লব’ মাত্র এক বছরেই প্রাণ নিয়েছে কয়েক লক্ষ সামুদ্রিক পাখির। এর আগে এত অল্প সময়, একসঙ্গে এত সামুদ্রিক পাখির মৃত্যু দেখেনি পৃথিবী।

২০১৩ সালে উত্তর আমেরিকার কাছে প্রশান্ত মহাসাগরে এই ‘ব্লব’-এর দেখা মেলে। মূলত এটি সামুদ্রিক হিটওয়েব, যার ফলে একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জলের উষ্ণতা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যায় অনেকটা। যত দিন যায়, এর বিস্তৃতি বাড়তে থাকে। একটা সময় ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আলাস্কা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে এই হিটওয়েব। যার ফলে পুরো বদলে যায় ওই অঞ্চলের সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র। ২০১৬ অবধি ব্লবের উপস্থিতি থাকলেও, তাঁর প্রভাব দেখা যায় এখনও। সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের গবেষণা সেই তথ্যটিকেই তুলে এনেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্লবের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সামুদ্রিক পাখি কমন মারে-র। কয়েক লাখ পাখি মারা গেছে এর ফলে। আমেরিকার পশ্চিম উপকূল থেকে প্রায় ৬২ হাজার কমন মারের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। তবে মনে করা হচ্ছে, সমুদ্রের মাঝে এই ঘটনা হওয়ার জন্য মৃত্যুর সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি হতে পারে। যা ইতিহাসে আগে কখনও দেখা যায়নি। এছাড়াও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতিও হয়েছে। বহু মাছ, প্ল্যাঙ্কটন যেমন মারা গেছে, তেমনই গরম জলে থাকতে পছন্দ করে এমন কিছু প্রাণী নতুন করে এই অঞ্চলে দেখা দিয়েছে। আখেরে যা বিপদের দিকেই ইঙ্গিত করছে।

যে অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে সাধারণত এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। কাজেই এই পুরো ব্যাপারটিকেই অশনি সংকেত হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। পরিবেশের এমন খামখেয়ালিপনায় ক্ষতি হচ্ছে প্রাণীজগতেরই। নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য। শুধু এখানেই নয়, এইরকম ব্লব আরও নানা জায়গায় হতে পারে বলে সন্দেহ করছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি একের পর এক দুর্যোগে পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তির পাশাপাশি নিজেরাও চেষ্টা করে দেখতে পারি না এর কারণগুলো কোথায় লুকিয়ে আছে?