২০ বছরের যাত্রায় অসংখ্য বিতর্ক ও গুজব, তবু জনপ্রিয়তার শীর্ষে উইকিপিডিয়া

/৬

ইতিহাস হোক বা বিজ্ঞান, অথবা সাম্প্রতিক কোনো তথ্য; ইন্টারনেটের এক ক্লিকেই এখন সবকিছু হাতের মুঠোয়। আর সহজকে আরও সহজ করে তুলেছে একটাই উদ্যোগ। উইকিপেডিয়া। সাধারণ মানুষের মতোই বিশেষজ্ঞরাও অনেক সময় সহজে তথ্য জাচাই করে নেন এখানেই। ৩১৬টি ভাষায় ৫৬ মিলিয়ন আর্টিকেল নিয়ে সত্যিই এক মুক্ত বিশ্বকোষ। দেখতে দেখতে ২০ বছরে পা দিল উইকিপেডিয়া। আর এর মধ্যেই নেট দুনিয়ায় ট্রাফিকের হিসাবে ১৫ নম্বর স্থানে জায়গা করে নিয়েছে উইকিপেডিয়া। তবে জটিলতাও দেখা দিয়েছে বহুবার। ঠিক সেইরকম ৫টি জটিলতার কথা থাকল এখানে।

/৬

উইকিপেডিয়ার জন্ম ২০০১ সালের ১৫ জানুয়ারি। এর ঠিক ৫ দিন পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিলেন জর্জ বুশ। তাঁর নামেও তৈরি হল উইকি পেজ। আর জটিলতার শুরু সেখানেই। তার কারণ উইকিপেডিয়ার খোলামেলা পলিসি। যে কেউ সেখানে এডিট করতে পারে। জর্জ বুশ সম্পর্কে একাধিক ভুল তথ্য ঢুকে গেল পেজে। বিশেষ করে গলফ ওয়ার সম্পর্কে তো গুজবের বন্যা বয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ আনতে বাধ্য হয় উইকিপেডিয়া। যে কেউ আর সেই পেজ এডিট করতে পারবেন না।

/৬

উইকিপেডিয়ার একটি জনপ্রিয় অথচ বিতর্কিত পেজ ‘গ্ল্যাডি ওয়েস্ট’। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপিকা ডঃ জেস ওয়েড এই পেজটি তৈরি করেন। গ্ল্যাডি ওয়েস্ট জিপিএস ব্যবস্থা সম্পর্কে গবেষণার একজন পথিকৃৎ। অবশ্য তাঁর কাজের স্বীকৃতি পাননি প্রায় কোথাও। একে তো কৃষ্ণাঙ্গ, তায় মহিলা। উইকিপেডিয়াতেও মহিলা বিজ্ঞানীদের নিয়ে খুবই কম তথ্য পাওয়া যায়। আর এই বর্ণবিদ্বেষী সমাজে বারবার আক্রমণের মুখে পড়েছে ‘গ্ল্যাডি ওয়েস্ট’ পেজটি। অবশ্য এর পরেও পেজটিকে রক্ষা করে চলেছেন উদ্যোক্তারা।

/৬

উইকিপেডিয়া মানেই বহু মানুষের তথ্যের সমাহার। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের তালিকা হোক অথবা রোমের পোপের তালিকা, সবই পাওয়া যাবে এক ক্লিকে। তবে ডব্লিউডব্লিউই খেলার রেস্টলারদের তালিকা বেশ গোলমেলে। বর্তমানে এটিই সবচেয়ে বেশিবার এডিট হওয়া উইকি পেজ। জর্জ বুশের পেজের থেকেও বেশিবার এডিট হয়েছে এটি। জানা যায়, অনেকেই নাকি নিজেদের রেস্টলার বলে পরিচয় দিয়ে তালিকায় নাম তুলে নিতে চান। সত্যিই এমন জনপ্রিয়তা এই একটি খেলার।

/৬

এবার বলা যাক আরও একটি তালিকার কথা। ‘ফানি ওয়ার্ডস’ নামের এই তালিকা তৈরি করে বেশ বিব্রত হয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। কোন শব্দ মজাদার, তা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। সত্যিই কি এর কোনো মাপকাঠি হয়? একসময় তো পেজটি সরিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছিল। যদিও এখন বহাল তবিয়তে টিকে রয়েছে পেজটি। নানা দেশের ভাষাবিদদের সাহায্যে তৈরি হয়েছে মাপকাঠিও। বর্তমানে পেজটিকে রীতিমতো একটি গবেষণার ফসল বলা চলে।

/৬

আর এবার আসা যাক সাম্প্রতিক মহামারী কোভিড-১৯-এর সম্বন্ধে। বিশ্বের ইতিহাসে বোধহয় এত বেশি গুজব আগে কখনও ছড়ায়নি। আর সেই গুজবের প্রভাব পড়তে শুরু করে উইকিপেডিয়া পেজেও। এমনকি এমন কোনো মহামারীর অস্তিত্ব নেই বলেও দাবি করেন অনেকে। তবে উইকিপেডিয়ার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকরা পরিস্থিতি সামাল দেন। ২০২০ সালের মে মাস থেকে আর যে কেউ এই পেজ এডিট করতে পারেন না। আজও সেই নিয়ন্ত্রণ চালু আছে। উইকিপেডিয়ার ইতিহাসে এত দীর্ঘদিন কোনো পেজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়নি। কিন্তু গুজব যে আজও ছড়াচ্ছে নতুন নতুন করে।

Powered by Froala Editor