পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ১১টি শহর, যেখানে আজও মানুষ বাস করে

/১২

সময়টা নেহাত কম নয়। অন্তত বেশ কয়েক হাজার বছর পিছিয়ে যাওয়াই যায়। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে, মানুষের হাত ধরে জন্য নিয়েছে অজস্র শহর। সময়ের গর্ভে হারিয়েও গিয়েছে অনেকগুলিই। আবার এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে, এমন শহরের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। ইতিহাস সেখানে থমকে থেমে নেই। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। একইসঙ্গে জড়িয়ে আছে হারিয়ে যাওয়া উপাদানদেরও।

/১২

জেরিকো, প্যালেস্তাইন - জর্ডন নদীর ধারে এই শহর সম্ভবত পৃথিবীর প্রথম দেয়ালঘেরা শহর। বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নমুনা থেকে ধারণা করা হয়, প্রায় ১৩ হাজার বছর আগে এখানে নাগরিক সভ্যতার সূচনা হয়েছিল। অন্তত ১১ হাজার বছরের প্রাচীন অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে আনুমানিক ১৫০০ বছর আগে জেরিকো শহরে মানুষের বাস লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। এর পিছনে কেউ ভূমিকম্পকে দায়ী করেন। কেউ আবার বলেন ইজিপ্সিয়দের আক্রমণেই এই শহর জনহীন হয়ে পড়ে। তবে আরব সাম্রাজ্যের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে জেরিকো শহরে আবারও বসতি শুরু হয়। আর বর্তমানে অন্তত ২৫ হাজার মানুষের বাস এখানে।

/১২

দামাসকাস, সিরিয়া - দামাসকাস শহরে মানুষের বসতি গড়ে ওঠে প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার বছর আগে। প্রাচীন পেগান ধর্ম থেকে শুরু করে পরবর্তীকালে ইহুদি এবং ইসলাম সংস্কৃতির বিরাট ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই শহর। ২০১৮ সালে এটি মেট্রোপলিটান শহরের স্বীকৃতি পায়। সম্প্রতি ইউনেস্কোর তরফ থেকে দামাসকাস শহরকে আরব সংস্কৃতির রাজধানী বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

/১২

রে, ইরান - তেহেরান শহরের অদূরে এই ঐতিহাসিক শহরটিতে মানুষের বসবাস শুরু হয় প্রায় ৬ হাজার বছর আগে। চেসিম-আলি হিলের কাছে এখনও যে বসবাসের চিহ্নগুলি টিকে আছে, তাদের বয়স ৫ হাজার বছরের কম নয়। রয়েছে ৫ হাজার বছরের প্রাচীন গেবরি দুর্গ। রে শহর আজও সারা পৃথিবীর জরাথ্রুস্টিয়ানদের কাছে অতি পবিত্র স্থান।

/১২

আরবিল, ইরাক - ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের আরবিল শহরে মানুষের বসবাস শুরু হয় অন্তত ৮ হাজার বছর আগে। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, তখন থেকেই সমতল শহরকে উঁচু করে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। এভাবেই শহরের অভ্যন্তরে গড়ে উঠেছিল উঁচু ঢিপি। আজও আরবিল শহরে গেলে সেই ঢিপি দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে এই ধরনের নগর পরিকল্পনা পৃথিবীর নানা জায়গায় দেখা যায়।

/১২

আলেপ্পো, সিরিয়া - আলেপ্পো শহরেও মানুষের বসবাস শুরু হয় ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার বছর আগে। পরবর্তীকালে অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যিক শহরের তকমা পায় এই শহর। মেসোপটেমিয়া এবং ভূমধ্যসাগরের মাঝামাঝি অবস্থানের কারণে বহু প্রাচীন কাল থেকেই এখানে বণিকদের ভিড় জমতে শুরু করে। বিখ্যাত সিল্ক রুটের শেষও এই আলেপ্পো শহরে এসেই। ফলে সব মিলিয়ে এখানকার ইতিহাস অতি বিচিত্র। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের নানা দেশের মানুষের সংস্কৃতি মিলেমিশে গিয়েছে এই শহরে।

/১২

ফাইয়াম, ইজিপ্ট - প্রাচীন শহরের কথা বলা হবে, আর মিশরের কথা আসবে না, তাই কি হয়? নীল নদের ধারে ফাইয়াম শহরেই সম্ভবত মিশরীয় সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়েছিল। আর সেটা অন্তত ৭ হাজার বছর আগে। যদিও খরার কারণে নানা সময় জনশূন্য হয়ে গিয়েছে ফাইয়াম শহর। কিন্তু মানুষ আবার ফিরেও এসেছেন। আজও ইজিপ্টের অন্যতম ব্যস্ত শহরগুলোর একটি ফাইয়াম।

/১২

এথেন্স, গ্রিস - এথেন্স মানে শুধু সক্রেটিস, প্লেটো বা অ্যারিস্টটলের দেশ নয়। তার ইতিহাস আরও আগে থেকে শুরু। অন্তত ৭ হাজার বছরের প্রাচীন জনবসতির প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে কিছু কিছু ঐতিহাসিকের মতে ৯ হাজার বছর আগেই শুরু হয়েছিল মানুষের বসবাস। এথেন্স শহরকে ঘিরেই ইউরোপের সংস্কৃতির বিকাশ। তাই এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব শুধু বয়স দিয়ে মাপা সম্ভব নয়। আজও গ্রিসের রাজধানী তথা ইউরোপের অন্যতম প্রসিদ্ধ শহরগুলোর একটা এথেন্স।

/১২

বাইব্লস, লেবানন - ফিনিসীয় সভ্যতার অন্তত ৯ হাজার বছরের প্রাচীন নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায় বাইব্লস শহরে। তবে পরিপূর্ণ শহর হিসাবে তার বয়স সম্ভবত ৭ হাজার বছরীর বেশি নয়। ফিনিসীয় সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন লিপিটি উদ্ধার হয়েছে এখান থেকেই। পরবর্তীকালে ছোটো-বড়ো নানা সভ্যতার সঙ্গে মিলেমিশে গিয়েছে এই বাইব্লস শহর।

১০/১২

জেরুজালেম - এই শহরের বুকেই গড়ে উঠেছে পৃথিবীর তিনটি প্রধান ধর্মমত। ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মের মানুষের কাছে পবিত্র ভূমি তো বটেই। জেরুজালেমকে ঘিরে এক বিচিত্র সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে অন্তত ৬৫০০ বছর ধরে। শহরের বুকে ২০০টির বেশি ঐতিহাসিক স্থাপত্য সেই সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।

১১/১২

লুক্সর, ইজিপ্ট - মিশরীয় সভ্যতার রাজধানী থিবস শহর ছিল এখানেই। পরবর্তীকালে বহু ধারা এসে মিশেছে এই শহরে। ৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে আজও সমান উজ্জ্বল লুক্সর শহরের ইতিহাস। আর মিশরের প্রাচীন মন্দির থেকে পিরামিড, সবই ছড়িয়ে রয়েছে এই শহরকে ঘিরেই।

১২/১২

আরগস, গ্রিস - প্রায় ৫ হাজার বছর আগে গ্রিসের আরগস শহরে মানুষের বসবাস শুরু হয়। উন্নত নগর সভ্যতা তো বটেই, এই শহরের সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য ছিল উর্বর কৃষিজমি। নগর সভ্যতার সঙ্গে কৃষিকাজের মেলবন্ধনে এক অভিনব জীবনযাপন গড়ে উঠেছিল এখানে। আজও সেই ধারা বহমান।

Powered by Froala Editor