ছাঁটাইয়ের কোপ ক্রিকেট দুনিয়াতেও, কাজ হারালেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ ১১ জন কোচ

করোনা পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত দেশের সার্বিক অর্থনীতি। কাজ হারিয়েছেন অন্তত ৪০ লক্ষ মানুষ। আর এবার সেই প্রভাব এসে পড়ল ক্রিকেট শিবিরেও। যদিও এখনও ভারতীয় দলের কোনো খেলোয়াড়কে সমস্যায় পড়তে হয়নি, কিন্তু হঠাৎই ১১ জন কোচকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। আর সেই তালিকায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শিবসুন্দর দাসের মতোই আছেন ঋষিকেশ কানিতকার, রমেশ পাওয়ার এবং সুজিত সোমসুন্দরের মতো প্রবীণ এবং অভিজ্ঞ কোচ।

গতবছর রাহুল দ্রাবিড় ন্যাশানাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে এই বিশেষ প্রশিক্ষক শিবির গড়ে তোলেন। প্রাথমিকভাবে এক বছরের চুক্তি সাক্ষরিত হয়। তবে সেই মেয়াদ শেষ হলেই যে কোচদের বিদায় নিতে হবে, এমনটা ভাবেননি কেউই। বিশেষ করে কিছুদিন আগে থেকে তাঁদের নিয়ে একাধিক ওয়েবিনার এবং আলোচনার আয়োজন করা হয়। সেখানে কোভিড পরবর্তী সময়ে কীভাবে খেলার কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, সেই সবকিছু নিয়েই আলোচনা চলেছে। আর এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে আইপিএল। দেশজুড়ে এখন দর্শকরা মেতে আছেন এই লিগকে ঘিরে। কিন্তু তার মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত সত্যিই অবাক করার মতো।

কর্মহীন হয়ে পড়া কোচদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে পুনরায় চুক্তিবদ্ধ না হওয়ার কোনো প্রকৃত কারণ দেখানো হয়নি। হঠাৎ একটি ফোনকলে রাহুল দ্রাবিড় জানিয়ে দেন যে তাঁদের আর প্রয়োজন নেই। যদিও দ্রাবিড় একথাও জানিয়েছেন যে তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে কোচদের শিবিরে রাখার সবরকম চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আর কোনোদিন তাঁদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কিনা, সেটাও বলা কঠিন। তবে এখনও অবধি দ্রাবিড়, বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি বা সেক্রেটারি জয় শাহ, কারোরই কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বিসিসিআই-এর এরকম আচরণে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ কর্মহীন কোচরা। এমনকি কিছুদিন আগেই একে একে সমস্ত রাজ্য বোর্ডে কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। অতএব আগামী এক বছর পর্যন্ত তাঁদের নতুন কোনো কাজের সুযোগ মিলবে না বলেই মনে করছেন অনেকে। এতদিন বার্ষিক ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা আয়ে বেশ ভালোভাবেই জীবন চলে গেলেও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ভবিষ্যৎ।

তবে প্রাথমিকভাবে আর্থিক অসঙ্গতিকেই কারণ বলে মনে হলেও সেই সম্ভবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন অনেকে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সূত্রে দাবি করা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে বিসিসিআই-এর আয় কিছুটা কমলেও, পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডকে এখনও লোকসানের মুখে পড়তে হয়নি। অন্যদিকে আইপিএল শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য খেলার প্রস্তুতিও চলছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো আন্তর্জাতিক ম্যাচেও ডাক পাবে ভারতীয় দল। এরকম পরিস্থিতিতে হঠাৎ কী কারণে ন্যাশানাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির কোচদের ছাঁটাই করা হল, সে প্রশ্ন এখনও রহস্যময়।

Powered by Froala Editor