বিশ্বের সবথেকে ব্যয়বহুল ফসল ‘হপ-শুট’, চাষ হচ্ছে প্রতিবেশী রাজ্য বিহারেই

মাত্র এক কেজি সবজির দাম ১ লাখ টাকা! অবাস্তব মনে হলেও সত্যি। বিশ্বের সবথেকে ব্যয়বহুল ফলস হিসাবে পরিচিত ‘হপ-শুট’ এবার পরীক্ষিতভাবেই ফলানো হচ্ছে ভারতে। নেপথ্যে বিহারের ঔরঙ্গাবাদ জেলার করমডিহি গ্রামের কৃষক অমরেশ সিং। ২০১২ সালে হাজারীবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে ইন্টারিমিডিয়েট পাস করার পর হপ-শুট চাষকেই নিজের পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন অমরেশ। এবং বলাই বাহুল্য, এক্ষেত্রে যথেষ্ট সফল তিনি।

তবে ধৈর্য আর পরীক্ষা-নিরীক্ষাই শেষ কথা এই বিশেষ সবজি চাষে। রয়েছে ঝুঁকিও। তবে বিগত ৭ বছরের অনুশীলনের মাধ্যমে সেই জায়গাটা পাকা করে নিয়েছেন বিহারের এই কৃষক। নিজের মাত্র ৫ কাঠা জমিতে বর্তমানে হপ-শুটস ফলাচ্ছেন তিনি। তাতে লাভ খুব একটা মন্দ হচ্ছে না। বছর ছয়েক আগে থেকেই এক কিলোর এই ফসলের জন্য ১ হাজার পাউন্ড পেতেন তিনি। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১ লক্ষ টাকা। 

তবে সমস্যার অন্য জায়গায়। ভারতে এই ফসলের বাজার প্রায় নেই বললেই চলে। বিদেশ থেকে যেটুকু অর্ডার আসে তার ভিত্তিতেই চাষাবাদ। 

কিন্তু এই আশ্চর্য ফসলের বিশেষত্ব কী? পারতপক্ষে এই গাছের ফুল, ফল, কাণ্ড, মূল— সবটাই ব্যবহৃত হয় ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে। সাধারণ খাদ্য হিসাবে ব্যবহারের পাশাপাশি তা থেকে তৈরি হয় বিয়ার। অন্যদিকে এর নির্যাস থেকে বানানো হয় ক্যানসার, যক্ষ্মা, অনিদ্রা, মানসিক বিভিন্ন রোগের ওষুধ। কখনো ত্বকের উজ্জ্বল্য বজায় রাখতেও ইউরোপীয়রা ব্যবহার করেন এর রস। আর সে জন্যই দামের নিরিখে বাকি সকল সবজির তুলনায় আকাশছোঁয়া হপ-শুট।

একাদশ শতকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল এই ফসল। তারপর ইউরোপের বেশ কিছু দেশেই জনপ্রিয়তা পায় হপ-শুটস। বর্তমানে রাশিয়া, জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স ইত্যাদি পশ্চিমের দেশগুলিতেই মূলত চাষ হয় এই ফসলের। তবে পিছিয়ে নেই ভারতও। বারাণসীর জাতীত উদ্ভিদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে রীতিমতো গবেষণা চলছে এই ফসলের ফলন নিয়ে। হিমাচলে এর চাষ আগে হলেও বাজারের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে বিগত কয়েক বছর। তবে নতুন করে সেই পথ দেখাচ্ছেন বিহারের অমরেশ সিং। আন্তর্জাতিক চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে যে বড়ো মাত্রায় এর ফলন সম্ভব, তারই প্রমাণ দিচ্ছেন অমরেশ…

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কোভিড-পরিস্থিতিতে ভারতের কোম্পানিগুলিতে রোল-বেসড মডেল প্রয়োজন, কিন্তু কেন?