কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির বিবাহের আমন্ত্রণপত্র

কৃষ্ণনগরের মহারাজ ক্ষৌণীশচন্দ্র ও মহারানী জ্যোতির্ম্ময়ী দেবীর পুত্র শ্রীমান সৌরীশচন্দ্রের কন্যা রাজ্যশ্রীর বিবাহের আমন্ত্রণপত্র এটি। এই আমন্ত্রণপত্রটি ছিমছাম, পরিপাটি ও সুন্দর। রূপার পাতের ছোট ছোট টুকরো লাগানো। খামটি নাকি অপূর্ব ছিল, যদিও তা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। এই কার্ডটি খুব শক্ত কাগজে তৈরি। ঠিক যেমন গ্রিটিংস কার্ড হয়, তেমন। তবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পাতায় কিছু লেখা নেই।

কার্ডের একদম ওপরে বাঁদিকে রয়েছে রাজবাড়ির সিলমোহর। তাতে রয়েছে দাঁড়িপাল্লা, তার নিচে একটা বাম দিকে মুখ করা ঘোড়া, একদম ওপরে লেখা যতো ধর্ম স্ততো জয়, আর নিচে রয়েছে ‘নদীয়া রাজ’ কথাটি। ইংরেজিতে বানানটা কিন্তু লেখা আছে ‘NUDDEA RAJ’। এর ঠিক পাশেই লেখা সংস্কৃত শ্লোক, যা নির্বাচন করে দিয়েছিলেন পণ্ডিত নীলমণি চট্টোপাধ্যায়(১০ মে, ১৮৮৪ - ৩১শে আগস্ট ১৯৭৬)। নীলমাধববাবুর  পরিবার রাজা রাঘব রায়ের কাছ থেকে সনদ লাভ করেছিলেন ১০৬৭ বঙ্গাব্দের ১১ই ফাল্গুন। সেই বংশলতিকা আমি দেখেছি।

কার্ডের মাঝে লেখা বিবাহের তারিখ(২৮ শে শ্রাবণ ১৩৭৭, ইংরেজি, ১৪ই আগস্ট ১৯৭০)। পাত্রী ও পাত্রের বিশদ পরিচিতি। তারপর সবান্ধবে আসার আমন্ত্রণ ও পত্র দিয়ে নিমন্ত্রণ করার জন্যে দুঃখ প্রকাশ। নিচে ডানদিকে মহারানী জ্যোতির্ম্ময়ী দেবীর নাম ও বাম দিকে কলকাতার বাড়ি 'নদীয়া হাউস'-এর ঠিকানা। নদীয়া বানানটি ইদানীং কোন অজ্ঞাত কারণে নদিয়া হয়েছে জানা নেই। হয়তো কোন আধুনিক মহাপণ্ডিত দুস্কর্মটি করে থাকবেন।

আরও পড়ুন
শান্তিপুরের ঝুলন মানেই রং-বেরঙের মাটির পুতুল

এই আমন্ত্রণপত্রটি বয়সের দিক থেকে তেমন সুপ্রাচীন না হলেও, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির ইতিহাসের এটি এক মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল – তা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশই নেই।

 কৃতজ্ঞতা স্বীকার : স্বর্গীয় নীলমণি চট্টোপাধ্যায়
ছবির কপিরাইট - লেখক

More From Author See More