অলিম্পিকে দড়ি-টানাটানির প্রতিযোগিতা, অংশ নিত একাধিক ‘ক্লাব’ও

‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খানখান।’ বাংলা সিনেমার অমর সংলাপগুলির মধ্যে অবশ্যই এটি অন্যতম। তবে রাজ্য-রাজনীতির বাইরেও দড়ি টানাটানি বা ‘টাগ অফ ওয়ার’ খেলার বিশেষ গুরুত্ব আছে। পাড়ায় পাড়ায়, স্কুল-কলেজে প্রতিবছরই ক্রীড়া উৎসব পালন করা হয়। আর সেই উৎসবে দড়ি টানাটানি থাকবে না, তা কি হয়! শুধু নামেই নয়; খেলার আমেজও যেন যুদ্ধের। তবে স্রেফ পাড়ার খেলাতেই থেমে থাকবে এটি? তা কিন্তু নয়। অন্তত অলিম্পিকের ইতিহাস তো সেই কথা বলে না…

অলিম্পিক? আর তার সঙ্গে দড়ি টানাটানি? মেলাতে আমাদের সবারই অসুবিধা হচ্ছে। বিশ্বের খেলার জগতের সেরা মঞ্চে জায়গা পাবে এমন সাধারণ একটি খেলা, সেটা কেউ ভাবতেও পারে না। অথচ ইতিহাস বলছে, একটা সময় চুটিয়ে আয়োজন করা হত ‘টাগ অফ ওয়ার’-এর। ১৯০০ থেকে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দ— টানা ২০ বছর ধরে অলিম্পিকের অংশ ছিল এই খেলা। এবং প্রতিবারই বেশ টানটান উত্তেজনায় ভরপুর ছিল স্টেডিয়াম। 

ঠিক কীরকম ছিল খেলার ছবিটা? আজকের দড়ি টানাটানির মতোই ছিল চেহারাটা। একেকটি দেশ থেকে টিম আসত; তাদেরকে বলা হত ‘ক্লাব’। তারপর শুরু হত যুদ্ধ। তবে মজার ব্যাপার, একটি দেশ থেকে একাধিক ক্লাব বা গ্রুপও আসত এই খেলায়। এতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে একটি দেশই অনেকগুলো পুরস্কার নিয়ে চলে যেত। যেমন ধরুন ১৯০৪ সালের কথা। সেই বছর আমেরিকাই তিনটে মেডেল জিতে নেয়। ঠিক চার বছর পর ইংল্যান্ডের সঙ্গেও একই জিনিস ঘটে। ২০ বছরের স্বল্প ইতিহাসে ছয়টি দেশই পদক তালিকায় জায়গা করে নেয়। আমেরিকা, ইংল্যান্ডের সঙ্গে সেখানে ছিল সুইডেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড ও বেলজিয়াম…. 

রীতিমতো অ্যাথলিটদের ইভেন্ট ছিল এই টাগ অফ ওয়ার। কিন্তু ১৯২০ সালের পর আর আয়োজন করাই হল না অলিম্পিকে। ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার লাইমলাইট থেকেও হারিয়ে যায় এই খেলাটি। কিন্তু মুছে যায়নি একেবারে। তার উত্তেজনা আজও উপভোগ করি আমরা। একটা দড়ি আর কিছু মানুষ— খেলা যেন যুদ্ধ আর প্রতিবাদেরই রূপক হয়ে ওঠে… 

Powered by Froala Editor