কৃষ্ণাঙ্গ-হত্যার প্রতিবাদ আছড়ে পড়ল হোয়াইট হাউসেও, বাঙ্কারে ‘পালিয়ে’ গেলেন ট্রাম্প

একটা মৃত্যু। একটা ছোট্ট বাক্য। আর তাতেই আগুন জ্বলে উঠল আমেরিকায়। যতই ছোটো বলা হোক না কেন, এই অত্যাচারের কাহিনি সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে গিয়ে আঘাত করেছে। কথা হচ্ছে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু প্রসঙ্গে। আমেরিকার অনেকেই রাস্তায় নেমে এসেছেন। প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন তাঁরা। এমনকি হোয়াইট হাউজের বাইরেও শুরু করেছিলেন প্রবল বিক্ষোভ সমাবেশ। আর এমন পরিস্থিতির মধ্যেই হোয়াইট হাউস ছেড়ে সপরিবারে বাঙ্কারে পালিয়ে গেলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

গত সোমবার, ২৫ মে মিনিপোলিসে জর্জ ফ্লয়েডের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে রাখে তিন-চারজন পুলিশ। দম বন্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান জর্জ। বারবার বলতে থাকেন ‘আই কান্ট ব্রিথ’। কিন্তু তাতেও টনক নড়েনি পুলিশের। এমন নৃশংস ঘটনায় ছাপ ফেলেছে বর্ণবিদ্বেষের ইস্যুও। জর্জ ফ্লয়েডের মতো কালো চামড়ার মানুষরা আর কতদিন এমন অত্যাচার সহ্য করবেন? এভাবে তাঁকে কেন মেরে ফেলা হল? এমন অভিযোগ নিয়েই ঘটনার পরের দিন থেকেই উত্তাল আমেরিকা। শুধু মিনিপোলিস নয়; নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি— সমস্ত জায়গায় আগুন জ্বলেছে রাস্তায়। বিক্ষোভে পথে নেমে এসেছেন মানুষ। হোয়াইট হাউসের সামনেও সমানে বিক্ষোভ চলে। সবার দাবি ছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করুক। 

কিন্তু তার পরিবর্তে ট্রাম্প আক্রমণ করে বসলেন প্রতিবাদীদের। তাঁর টুইটে শোনা গিয়েছিল রীতিমতো হুমকির সুর। এমন ‘ঔদ্ধত্য’-এর বিরুদ্ধেই আরও ফেটে পড়ে জনতা। প্রায় হোয়াইট হাউজ আক্রমণ করে বসেন তাঁরা। আমেরিকার ইতিহাসে এমন ঘটনা দেখা গেছে কিনা, সন্দেহ। এমন পরিস্থিতিতেই সপরিবারে বাঙ্কারে সুরক্ষার আড়ালে আশ্রয় নেন ট্রাম্প। এর আগেও করোনা পরিস্থিতিতে আক্রমণাত্মক কথা বলে বিরাগভাজন হয়েছিলেন তিনি। এখনও করোনার পরিস্থিতি একদমই স্বাভাবিক হয়নি। তার মধ্যেই এই বিক্ষোভ… 

তবে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনা শুধু বর্ণবিদ্বেষের নয়। সাধারণ মানুষের নিপীড়নের ঘটনাও বটে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, ক্ষমতার বিরুদ্ধে এমন প্রতিবাদ তাই মার্কিন গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে অন্যান্য দেশেও। ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইথিওপিয়া, চিন, ফ্রান্স-সহ বহু দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সবার মন্ত্র হয়ে উঠেছে ‘আই কান্ট ব্রিথ’। রাষ্ট্রব্যবস্থার এই দমননীতির বিরুদ্ধে যে কেউই শ্বাস নিতে পারছেন না, সেটাই বারবার বলতে চাইছেন প্রতিবাদীরা। 

Powered by Froala Editor

More From Author See More