সমুদ্রে ফেলা হচ্ছে বিষাক্ত বর্জ্য, আইনি লড়াই পাপুয়া নিউগিনির গ্রামবাসীদের

দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ নিয়ে আন্দোলন চলছে পৃথিবীতে। এই করোনা পরিস্থিতিতেও বন ধ্বংস ও পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ এসেছে। আর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে সরকার ও শিল্প-কারখানা। এবার সেই পথেই হাঁটল পাপুয়া নিউগিনির অধিবাসীরা। সরকারের সঙ্গে তাঁদের আইনি সংঘাতের মাঝেই আরও একবার সামনে উঠে এল পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির কথা। যার মূলে আছে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত ব্যাটারি কোম্পানি।


রামু নিকো কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই বেশ বিখ্যাত। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ব্যাটারি নিকেল প্রোডাকশন এখানেই হয়। তাঁদেরই কারখানা রয়েছে পাপুয়া নিউগিনিতে। আর এর জন্য দরকার কাঁচামাল। ব্যাটারি শিল্পের মূল জিনিস হল নিকেল। পাপুয়া নিউগিনির খনি থেকেই এই নিকেল সংগ্রহ করে এই কোম্পানিটি। আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে আসল সমস্যা। 


২০১২ থেকে এখানে নিকোল উত্তোলন করা হচ্ছে। আর যা খনিজ বর্জ্য পাওয়া যাচ্ছে, সবই ফেলা হচ্ছে নদী, জলাশয় ও সমুদ্রে। সেখান থেকেই ছড়াচ্ছে দূষণ। রামু নিকো ক্রমশ ঝাঁ-চকচকে হচ্ছে; কিন্তু নষ্ট হচ্ছে পাপুয়া নিউগিনির পরিবেশ। সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত তো হচ্ছেই; মাছ, প্রবাল-সহ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতি হচ্ছে। সেইসঙ্গে সেখানকার মানুষগুলোর শরীরেও ঢুকে যাচ্ছে এই বর্জ্য। যার ফলে নানা কঠিন রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। 


এই জায়গা থেকেই শুরু হয় প্রতিবাদ। সেখানেই নতুন সংযোজন ঘটে ফেব্রুয়ারিতে। পাপুয়া নিউগিনির অন্তত পাঁচ হাজার জন গ্রামবাসী মিলিতভাবে সরকারের কাছে আবেদন করে। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে সমুদ্র ও জলাশয়গুলিতে খনিজ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে কারখানার বর্জ্যও যাতে সমুদ্রে না পড়ে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। এবং অবশ্যই, ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। কারণ বিগত কয়েক বছর ধরে অনেকটা দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখান থেকেই সরকারের সঙ্গে সংঘাত ও আইনি লড়াই। যা সেখানকার পরিবেশ আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। পৃথিবীর পরিবেশপ্রেমীরা পাপুয়া নিউগিনির ওই মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। ফলাফল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেইদিকেই নজর থাকবে গোটা বিশ্বের।

Powered by Froala Editor