ছোঁয়াচে টিক-বোর্ন ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত ৭, আঁতুড়ঘর আবারও চিন

করোনা, বিউবোনিক প্লেগের পর এবার দৃশ্যে উপস্থিত নতুন ভাইরাস টিক-বোর্ন ভাইরাস। এবারও ভাইরাসের আঁতুড়ঘর সেই চিনই। চিনের এক সংবাদমাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ভাইরাসের উপদ্রব প্রথম শুরু হয় চিনের জিয়াংশু প্রদেশে। এঁটুলি জাতীয় একটি পোকার কামড়েই ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস।

টিক-বোর্ন ভাইরাস নামে পরিচিত হলেও এর আসল নাম এসএফটিএস ভাইরাস। এঁটুলি পোকার কামড়ে যেমন সংক্রমিত হওয়া ঘটনা সামনে এসেছে। তেমনই আধিকারিকরা সাবধান করেছেন এই ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামকও। মানুষের থেকে মানুষের মধ্যেও সংক্রমণ হতে পারে এই ভাইরাসের। রক্ত বা শ্লেষ্মার মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই রোগ। ফলে দুশ্চিন্তা বাড়ছে চিনের বিভিন্ন প্রদেশে।

চিনের সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এখনও অবধি ৬৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। যদিও সংখ্যা নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন মহলে জল্পনা। যার মধ্যে জিয়াংশু প্রদেশেরই ৩৭ জন মানুষ। এছাড়াও এই ভাইরাস ছড়িয়েছে চিনের আনহুই প্রদেশে। নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণে মারা গেছেন ৭ জন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই সংক্রামক ব্যধির মৃত্যুর হার মোটামুটি ১৬-৩০ শতাংশের মতো। ভাইরাসের উপসর্গ হিসাবে দেখা গেছে জ্বর, কাশি, বমি, ম্যালজিয়া, ডায়েরিয়া, মাথার যন্ত্রণা, অ্যানোরেক্সিয়া। এছাড়াও মাত্রাতিরিক্তভাবেই হ্রাস পায় রক্তের অণুচক্রিকা এবং লিউকোসাইটও। 

তবে নতুন বলা ভুল হবে। ২০১১ সালেই এই ভাইরাসের প্যাথোজেনকে চিহ্নিত করেন বিজ্ঞানীরা। বুনিয়াভাইরাস গোষ্ঠীর অন্তর্গত এই ভাইরাসের ২০১০ সালে ৭১ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে আক্রান্ত হন প্রায় ২৬০০ জন। চিন ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১৩ সালে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৬ জন। ২০১৭-তে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭০। জাপানেও ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল সংক্রমণের সংখ্যা। 

আরও পড়ুন
করোনার পর এবার বুবনিক প্লেগ, লকডাউন চিনের গ্রামে

২০১৭ সাল নাগাদ এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও ৩ বছরের মধ্যেই আবার প্রাণ কাড়ল এই নোভেল বুনিয়াভাইরাস। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হতে পারলেও প্রাথমিক সংক্রমণের কারণই হল পোকার কামড়। তাই সাধারণ মানুষকে পোকার থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে প্রাথমিকভাবে। চিন প্রশাসন এই মুহূর্তে মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছে। তবে কী প্রকার ব্যাপকতা ধারণ করতে পারে এর সংক্রমণ, সেই বিষয় এখনও অধরাই... 

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
দশজনের মধ্যে সাতজনই উপসর্গহীন, কলকাতা পুরসভার অ্যান্টিজেন টেস্টে বাড়ছে চিন্তা