একঝাঁক ‘স্পেশাল’ কচিকাঁচা রমরমিয়ে চালাচ্ছে কলকাতার এই ক্যাফে

জন্মানোর পর মেয়ের বেড়ে ওঠা ছিল অনান্য ছেলে-মেয়েদের থেকে একটু অন্যরকম। আর পাঁচটা ছেলে-মেয়ের জীবন থেকে এই মেয়েটির জীবন ছিল কঠিন। প্রতি মূহূর্তেই মা-মেয়েকে লড়াই করতে হয়েছিল সমাজের সঙ্গে। নিজের মেয়ে স্পেশাল চাইল্ড হওয়ায়, তার স্বনির্ভর জীবনযাত্রার জন্যে বেশ কিছু স্পেশাল চাইল্ডদের নিয়ে মা শুরু করেছিলেন 'আই ক্যান ফ্লাই' ফাউন্ডেশন। তারই পরবর্তী ধাপ হিসেবে কলকাতার বুকে শুরু হল নতুন ক্যাফে 'আই ক্যান ফ্লাই'।

মিনু বুধিয়ার মেয়ে প্রাচী ছোটো থেকেই স্পেশাল চাইল্ড। তাই তার মা বুঝেছিলেন, একজন স্পেশাল চাইল্ড তার জীবন নিয়ে কতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তাই বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষিত স্পেশাল চাইল্ডদের নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার ম্যাডক্স স্কোয়ারের কাছে গড়ে ওঠে এই ক্যাফে।

ক্যাফের ভেতরে ঢুকলেই সর্বত্র দেখা যায় উজ্জ্বল রঙের ছোঁয়া। সঙ্গে সেখানকার একদল ছেলেমেয়ের উজ্জ্বল হাসিমুখ। শুধু রং নয়, ক্যাফের ভেতরে দেওয়াল জুড়ে রয়েছে অসংখ্য গাছের সমাহার। ক্যাফেকে সাজানোর পাশাপাশি ব্যস্ততাও কম নয় মেঘনা, কোমল, প্রকৃতি বা অভিশ্রীদের। কাস্টমারকে সামলাতে সর্বত্র ছুটে বেড়াতে হচ্ছে তাদের।

অথচ ছোট থেকে এরা অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। আর পাঁচটা বাচ্চাদের মতন এদের বেড়ে ওঠা সহজ ছিল না। তাই স্বনির্ভর করে তুলতে এদের নিয়ে অন্যরকম এক উদ্যোগের পরিকল্পনা করেন মিনু ও তার বড় মেয়ে প্রিয়ম।

হইহই করে চলছে এই ক্যাফে। ওয়াইফাই, সুস্বাদু খাবার সব মিলিয়ে শহরের অনান্য ক্যাফেকে পাল্লা দিতে পারে 'আই ক্যান ফ্লাই'। স্পেশাল চাইল্ডরাই পটু হাতে সামলাচ্ছে খাবার তৈরি থেকে পরিবেশন - সব।

স্পেশাল চাইল্ডদের নিয়ে যারা দ্বিধাগ্রস্ত, মা-বাবারা ভেবে পান না বড় হয়ে তাদের ছেলেমেয়েরা কী করবে, তাদের জন্যই গড়ে উঠেছিল এই ফাউন্ডেশন। আর আজ সেখানেই কর্মরত সেইসব ছেলেমেয়েরা। এমন উদ্যোগ আগামী দিনে অনান্য স্পেশাল চাইল্ড ও তাদের বাবা-মাকে ভরসা জোগাবে অনেকখানি।