হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকার হাসপাতালের, রাস্তাতেই শ্বাসকষ্টে মৃত প্রৌঢ়

মানুষটার গন্তব্য ছিল অন্য জায়গায়। কিন্তু মাঝপথেই নেমে যান তিনি। তখন একটি হাসপাতাল খুঁজছেন তিনি; প্রবল শ্বাসকষ্টে ছটফট করছেন। সামনে পেলেন অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু অদ্ভুতভাবে, তাঁকে হাসপাতাল অবধি নিয়ে যেতে অস্বীকার করে অ্যাম্বুলেন্সের চালক। ফলে, রাস্তাতেই হাঁপাতে হাঁপাতে মানুষটার প্রাণবায়ু বেরিয়ে গেল!

এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল তেলেঙ্গানা। যেখানে স্রেফ কিছু মানুষের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের অভাব কেড়ে নিল একজনের প্রাণ। সেই ভিডিওই ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনার সূত্রপাত একটি বাসে। সেই গাড়িতে করেই কামারেড্ডি থেকে হায়দ্রাবাদের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন বছর বাহান্ন’র আর শ্রীনিবাস বাবু। বাসের মধ্যেই প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। একসময় সিদ্ধান্ত নেন, সামনেই কোথাও একটা নেমে হাসপাতালের খোঁজ করবেন।

সেই ভেবেই নেমে পড়া চেগুন্তায়। এদিকে শ্বাসকষ্টও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। কিন্তু হাসপাতালে কী করে যাবেন? ওই রাস্তাতেই একটি গাছের তলায় শুয়ে পড়েন তিনি। সারা শরীর ঘামে ভিজে উঠেছে। পুলিশ আসার পর জানা যায়, ভদ্রলোকের আগে থেকেই অ্যাজমার সমস্যা ছিল। পুলিশের সাহায্য নিয়ে হেঁটে হেঁটেই হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন তিনি। কিন্তু মাঝপথেই পড়ে যান রাস্তায়। এদিকে পুলিশ অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করার প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁরা আসেন। কিন্তু শ্রীনিবাসকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকার করে। তাঁদের বক্তব্য, ভদ্রলোকের নাকি ‘করোনার লক্ষণ’ দেখা দিয়েছে। তাই হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবেন না তাঁরা!

এরপর আরও একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে পুলিশ। কিন্তু সেই অ্যাম্বুলেন্স আসার আগেই রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়েন আর শ্রীনিবাস। সেখানেই মারা যান তিনি। গোটা ঘটনায় মৃতের পরিবারই শুধু নয়, হতবাক হয়ে গেছে পুলিশও। করোনার আতঙ্ক মানুষকে এমন অমানবিক করে দিতে পারে, সেটা হয়ত ধারণা ছিল না। এই সচেতনতার অভাবই একজন মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল। 

আরও পড়ুন
করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল তিন লাখ, গোটা বিশ্বে চতুর্থ ভারত

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মেলেনি করোনার চিকিৎসা, মেঝেতে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা কলকাতার একই পরিবারের তিনজনের