উবেরের পথেই স্যুইগি, ছাঁটাই করা হল ১১০০ কর্মী

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এবং লকডাউনের জেরে বিপণনের অনেক ক্ষেত্রই যথেষ্ট ক্ষতির মুখে পড়েছে। তেমনই ক্ষতিগ্রস্ত অনলাইন ফুড ডেলিভারি ব্যবসাও। আপাতভাবে ব্যবসা চালু থাকলেও যথেষ্ট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর তার নিশ্চিত ফলশ্রুতি অবশ্যই কর্মী ছাঁটাই। জোমাটো কোম্পানি কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়েছে আগেই। এরপর আরও এক বড় সংস্থা স্যুইগি ১১০০ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিল। কর্মীদের ই-মেইল মারফত এই কথা জানিয়ে দেন কোম্পানির সিইও শ্রীহর্ষ মাজেটি।

তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা শুনলেই আমাদের মনের মধ্যে উঁকি দেয় অসংখ্য পরিবারের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ বা আন্দোলনের চেহারাও নেয়। তবে স্যুইগি কোম্পানি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে যেন এক বিকল্প নজির স্থাপন করল। তার কারণ অর্থনৈতিক কারণে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও কর্মীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন কর্তৃপক্ষ। আর তাই ছাঁটাইয়ের নোটিশের সঙ্গে সঙ্গে জানিয়েছেন বেশ কিছু প্রকল্পের কথাও।

প্রথমত, কোম্পানির প্রত্যেক স্থায়ী কর্মচারী আগামী আট মাস বেতন পাবেন। আর বাকিরাও পাবেন তিন মাসের বেতন। অতএব অকস্মাৎ রোজগার হারাতে হচ্ছে না কাউকেই। দ্বিতীয়ত, এই মহামারীর পরিস্থিতিতে কর্মীদের স্বাস্থ্যের দিকেও সচেতন কর্তৃপক্ষ। তাই প্রত্যেক কর্মীকে এবং তাঁর পরিবারকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্যবীমার সুবিধা। সেইসঙ্গে বিশেষ সহায়তা প্রকল্পের মাধ্যমে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থাও করে দেবে কোম্পানি। এছাড়াও কর্মীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ কাউন্সেলিং চালু করতে চলেছে কোম্পানি। এমনকি বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে অনলাইন ট্রেনিংএর ব্যবস্থাও করতে চলেছেন তাঁরা। ফলে লকডাউনের মেয়াদ শেষে কাউকেই বেকার থাকতে হবে না, এবিষয়ে আশাবাদী মিস্টার মাজেটি।

শুধুই লকডাউন নয়, ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাসও বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। আর তার ফলেই ক্ষতির মুখে পড়েছে ফুড ডেলিভারি কোম্পানিগুলি। ইতিমধ্যে অনেকগুলি ক্লাউড কিচেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার ডেলিভারি করেও বিশেষ লাভ দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানি বাধ্য হচ্ছে কর্মী ছাঁটাই করতে। কিন্তু সমস্ত আর্থিক বিপর্যয়ের ভার কি খেটে খাওয়া মানুষকেই বইতে হবে? কোম্পানির এতদিনের আয়ের থেকে সামান্য সাহায্য পেলেই কিন্তু তাঁরা আবার সুস্থ জীবনে ফিরে যেতে পারেন। স্যুইগি কোম্পানি সেই সুযোগটাই দিল কর্মীদের। এমন ঘটনা অভিনব বৈকি!

More From Author See More