সুন্দরবনে হদিশ মিলল নেকড়ের, অবাক বিজ্ঞানীরা

দিন বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে প্রকৃতির নিয়ম। পাল্লা দিয়ে বদলাচ্ছে প্রাণীদের স্থানিক বৈচিত্রও। এটি নতুন নয়, আগেও ঘটেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এমন প্রথম। ঘটনার সূত্রপাত নিউজ রিপোর্টে একটি ছবি দেখে। কুকুরের মতো দেখতে একটি মৃত জন্তু। বাংলাদেশের সুন্দরবনের তালতোলি গ্রামের মানুষেরা প্রাণীটিকে মেরে ফেলেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী মুনতাসির আকাশের চোখ ছবিটিতেই আটকে গিয়েছিল। সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল যে বিষয়টি, তা হল প্রাণীটির গলা ও গালে থাকা সাদা সাদা কিছু দাগ।

আকাশ তাঁর সহকর্মী জন ক্যামলার ও উইলিয়াম ডাকওয়ার্থকে ইমেল পাঠান। সকলেই সহমত হন যে, ওই প্রাণীটি একটি নেকড়ে। কিন্তু সমস্যা হলো বাংলাদেশে নেকড়ে পাওয়া যায় না। ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সরকারি নথিপত্রে কোনো নেকড়ের উপস্থিতির তথ্য নেই। এরপর বরগুনা জেলার ডেপুটি কমিশনারের কাছ থেকে আকাশ ওই প্রাণীর কিছু ছবি সংগ্রহ করেন। ওই ছবিগুলি প্রাণীটির নেকড়ে পরিচয়তেই সম্মতি দেয়। নেকড়েটি ছিল ভারতীয় নেকড়ে ক্যানিস লিউপাস প্যালিপিস।

পরদিন আকাশ তালতোলি যান। বনবিভাগের অফিসের কাছে প্রাণীটিকে কবর দেওয়া হয়েছিল। বনকর্মীদের সাহায্যে প্রাণীটিকে তোলেন তিনি। প্রাণীটির পা থেকে কিছু লোম ও টিস্যু সংগ্রহ করা হয়। ডি.এন.এ টেস্টে প্রমাণিত হয় এটি কোনো শিয়াল না বরং নেকড়ে-ই।

কিন্তু ব্যাপার হল, শুধু ম্যানগ্রোভ নয়, সমগ্র সুন্দরবনেও নেকড়ে থাকার কথা নয়। এমন ঘটনা বিরল। ভারতীয় নেকড়েরা হয় চারণভূমি নয়তো পর্ণমোচী অরণ্যে থাকে। তবে কি সুন্দরবনে আরো নেকড়ে থাকতে পারে? প্রজননের ফলে তাদের কি সংখ্যা বাড়ছে? সময় বলবে সে কথা। আপাতত অপেক্ষাটুকু সম্বল।