উচ্চ-মাধ্যমিকে স্টার মার্কস; প্রকাশ্যে এল চিকিৎসার অবহেলায় মৃত শুভ্রজিতের রেজাল্ট

উচ্চ-মাধ্যমিকের ফলফল প্রকাশ হল সকালেই। আর জানা গেল বেশ প্রতিশ্রুতি সম্পন্নই ফলাফল এনেছে শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তবে সেই ফলাফল ঘিরে উচ্ছ্বাস নেই কোনো। রয়েছে এক রাশ শূন্যতা এবং হতাশা। ইছাপুরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ছবি এখন এমনই। কারণ স্টার পাওয়া মেধাবী শুভ্রজিৎ আর নেই সকলের মধ্যে। কিছুদিন আগেই হারিয়ে গেছে চিরঘুমে।

উচ্চ-মাধ্যমিকে শুভ্রজিতের সংগ্রহ ৩৬৯ নম্বর। শতাংশের নিরিখে তার অবস্থান ৭৫.২৩ শতাংশ ছাত্রদের আগে। গ্রেড ‘এ’ পাওয়া উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শুভ্রজিৎ বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে। তার মৃত্যুর পিছনে রয়েছে চিকিৎসারই গাফিলতি। নাহলে হয়তো এই পরিণতি হত না তার।

সম্প্রতি তাঁর মধ্যে দেখা গিয়েছিল করোনা ভাইরাসের উপসর্গ। তবে টেস্ট করালেও ভর্তি নেয়নি মেডিক্যাল কলেজ। ফিরিয়ে দিয়েছিল সাগর দত্ত হাসপাতালও। জানিয়েছিল শয্যা নেই কোনো। সদ্য করোনা পরীক্ষা হওয়ায় রিপোর্ট না আসায় ভর্তি নেয়নি বেলঘরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালও। রাস্তায় অসুস্থ ছেলেকে নিয়েই হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকে তার মা-বাবা। তবে লড়াই জারি রাখতে পারেনি বছর আঠারোর শুভ্রজিৎ। মৃত্যুর পরেও তাঁকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য আটকে রাখা হয়েছিল তাঁর দেহ-ও। হাসপাতাল আর বেলঘরিয়া থানার বিরুদ্ধেই আইনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। শেষমেশ একঝলকের জন্য দর্শন পেয়েছিলেন মৃত সন্তানের। 

স্রেফ গাফিলতির কারণেই হারিয়ে গেল আরও একটি নক্ষত্র। শুভ্রজিতের মৃত্যু বার বার প্রশ্ন তুলছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষা প্রদান করতে আদৌ কি প্রস্তুত আমাদের প্রশাসন? স্বাস্থ্য ব্যবস্থা?

Powered by Froala Editor