অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন তৈরির দায়িত্বে ভারতীয় সংস্থা, ৫০ শতাংশ বরাদ্দ দেশের জন্যই

সম্প্রতি হাতে এসেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ফলাফল। প্রথম পর্যায়ে ১০৭৭ জনের ওপরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফল বেশ ইতিবাচকই। দ্বিতীয় পর্যায়ে ট্রায়ালের কথা ছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, আফ্রিকা এবং ব্রাজিলে। এবার অক্সফোর্ড জানাল অনুমতি পেলে ভারতেও চলবে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল।

অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন গবেষণার সঙ্গে জুড়ে ছিল ভারতের অন্যতম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। পুনে ভিত্তিক এই সংস্থা শুধু ভারতের নয় বরং সারা বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম ভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারক। সংস্থার প্রধান আদার পুনাওয়ালাই সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেন ভারতে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের অনুমতি চেয়ে। পাশাপাশি তিনি জানান, এই ভ্যাকসিনের পরবর্তী ট্রায়ালগুলো সফল হলে বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন তৈরির জন্য তাঁদের পরিকাঠামো পুরোপুরিই তৈরি। 

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই সাফল্যের কথা ভেবেই বড়ো অঙ্কের ভ্যাকসিন প্রস্তুতির জন্য সাতটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে। তার মধ্যেই রয়েছে ভারতীয় সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট। আদার পুনওয়ালা জানান, চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেনের জন্যই বরাদ্দ হয়েছে ১০ কোটি ভ্যাকসিন। তবে দেশের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন প্রস্তুতিতে তাঁরা সচেষ্ট থাকবেন। এই বছরের শেষেই যে আসতে চলেছে ভ্যাকসিন তারও ইঙ্গিত দেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দেন, চূড়ান্ত সাফল্যের ঠিক পর-পরই দু-তিন মাসের মধ্যে কয়েক কোটি ডোজের ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হবে সেরাম ইনস্টিটিউট। ২০২১ এর প্রথম চতুর্থাংশের মধ্যে বাজারে আনবে ৩০-৪০ কোটি ভ্যাকসিন। আর তার ৫০ শতাংশই বরাদ্দ থাকবে ভারতের জন্য। 

তবে মহামারীর আবহের কথা ভেবেই এই ভ্যাকসিনের দাম রাখা হচ্ছে মানুষের সাধ্যের মধ্যে। যেখানে করোনার প্রতি নমুনা পিছু খরচ হয় ২৫০০ টাকা, সেখানে এই ভ্যাকসিনের দাম পড়বে মাত্র ১০০০ টাকা প্রতি ডোজ। তবে ভারতীয় নাগরিকদের এই অর্থও দিতে হবে না। তিনি বলেন, ভাইরাসের সংক্রমণ একটি জাতীয় বিপর্যয়। তাই এই ভ্যাকসিনের মূল্যও প্রদান করা উচিত সরকারের এবং সেটিই হতে চলেছে। অবশ্য এখনও অবধি ভারত সরকারের সঙ্গে তেমন কোনো চুক্তি হয়েছে কিনা, সরকারের তরফে বিবৃতি পাওয়া যায়নি। 

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যখন দেশে ১২ লক্ষ ছুঁই ছুঁই। তখন সিরাম ইনস্টিটিউট বাড়তি ভরসা জোগাল ভারতীয়দের। সেই সঙ্গেই আগে থেকে ভ্যাকসিন তৈরির মহড়া এবং পরিকাঠামো গঠন করে রাখল তারা। কাজেই ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদনের পরে মানুষের হাতে পৌঁছাতে দেরি হবে না, এ-আশা করাই যায়...

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
দেশের অন্তত ১৮ কোটি মানুষের দেহেই রয়েছে করোনার অ্যান্টিবডি!

More From Author See More