৮২ বছর আগে বাঙালির হাতেই যাত্রা শুরু সেনকো গোল্ডের, প্রয়াত কর্ণধার শঙ্কর সেন

বাঙালির নাকি ভাঁড়ে মা ভবানী। অথচ সেই স্বদেশির সময় থেকে এদেশে জাতীয়তাবাদের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে ব্যবসা। কিন্তু এই সবই অনেক বছর আগের কথা। আজকাল জাতির মর্যাদা নেমে গিয়েছে নিছক কেরানির পর্যায়ে। কিন্তু এসবের মধ্যেই ব্যবসায়ী স্তরে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান সামান্য যোগ্যতা অর্জন করেছে, তার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান অবশ্যই সেনকো গোল্ড।

সময়টা ১৯৩৮ সাল। অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৮০ বছর আগেকার কথা। কলকাতা তখন স্বদেশি আন্দোলনের একটা অন্যতম প্রেক্ষাপট। আর ভারতের ব্যবসা মানেই তাতে সোনা অবশ্যই থাকবে। ব্যোমকেশ হোক বা জয়ন্ত মানিক, গোয়েন্দা উপন্যাসের সঙ্গে জড়িয়ে সবই। এমন সময় ১৯৩৮ সালে চিৎপুরে জন্ম নিল একটি দোকান। কালক্রমে সেটাই যে বাঙালির সোনার ব্যবসার পীঠস্থান হয়ে দাঁড়াবে, সেটা কি বোঝা গিয়েছিল সেদিন?

সেনকো গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স একটা নিছক দোকান হিসাবে আত্মপ্রকাশ করল। আর জন্ম নিল বাঙালির প্রতিদিনের সেনকো জুয়েলার্স। পারিবারিক বিবাদে তার অনেক বিভাজন ঘটেছে। কিন্তু জনপ্রিয়তায় ছেদ পড়েনি। সেনকো গোল্ডের কর্ণধার শঙ্কর সেন মারা গেলেন মঙ্গলবার দুপুরে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ভারতের জেম অ্যান্ড জুয়েলারি কাউন্সিলের সভাপতি পদে আসীন অবস্থাতেই মারা গেলেন তিনি। যদিও তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি, কিন্তু এই সময়কালে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেওয়া অসংখ্য কিংবদন্তির একজন শঙ্কর সেন। পারিবারিক বিবাদের মধ্যেও টিকিয়ে রেখেছিলেন বাঙালির এই ব্যবসা। 

মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই এই গল্পের অবসান ঘটল অবশেষে। বাঙালির গর্বের অনবেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। তবু বহু বিবাদের মধ্যেও টিকে ছিল সেনকো জুয়েলার্স। আজ তার প্রাতিষ্ঠানিক অস্তিত্ব টিকে গেলেও কোথাও যেন প্রাণের বড্ড অভাব।

আরও পড়ুন
১০১ বছর বয়সে চলে গেলেন কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী অমলাশঙ্কর

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মিশরের প্রাচীন হায়ারোগ্লিফিক লিপির ট্রান্সলেটর আনতে চলেছে গুগল