মানবদেহে কী কী প্রভাব ফেলে মাইক্রোপ্লাস্টিক? জানাল সাম্প্রতিক গবেষণা

মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া থেকে শুরু করে মারিয়ানা ট্রেঞ্চ— লোকালয় তো বটেই, পৃথিবীর দুর্গমতম স্থানেও ছড়িয়ে পড়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। কিছুদিন আগেই প্রকাশিত একটি গবেষণা জানিয়েছিল, সমুদ্রের পাশাপাশি মৃত্তিকাদূষণও ঘটাচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। বিপর্যস্ত করে তুলছে গোটা বাস্তুতন্ত্রকে। সেই তালিকায় রয়েছে মানুষও। খাদ্য এবং পানীয়ের সঙ্গেই মানবদেহে প্রবেশ করে এই ধরনের অণুদূষক। কিন্তু মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি করে মাইক্রোপ্লাস্টিক (Microplastic)? এতদিন পর্যন্ত জানা ছিল না সেই উত্তর। এবার সাম্প্রতিক গবেষণা আলোকপাত করল সেই অজানা অধ্যায়ে।

যুক্তরাজ্যের হাল ইয়র্ক মেডিক্যাল স্কুলের টক্সিকোলজির গবেষকরা জড়িত ছিলেন এই গবেষণার সঙ্গে। পরীক্ষাগারে মানবকোষের বিশ্লেষণের মাধ্যমেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাবগুলিকে পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা। তাছাড়াও পূর্ববর্তী ১৭টি সমীক্ষার ফলাফলকেও এই গবেষণায় কাজে লাগিয়েছেন ব্রিটিশ অধ্যাপকরা। সম্প্রতি ‘জার্নাল অফ হ্যাজার্ডাস মেটেরিয়াল’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি। 

গবেষণায় উঠে আসে, মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাবে প্রাথমিকভাবে মানব দেহকোষের মৃত্যু এবং অ্যালার্জির মতো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। দেহে প্রবেশ করা মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণের ওপরে নির্ভর করা সেই প্রতিক্রিয়ার মাত্রাও। তাছাড়াও কোষপ্রাচীরকে খুব সহজেই ভেঙে ফেলে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক। বিশেষ করে সামুদ্রিক খাবার এবং লবণের মাধ্যমেই মানুষের শরীরে প্রবেশ করে মাইক্রোপ্লাস্টিক। পাশাপাশি শ্বাসের মাধ্যমেও প্রবেশ করে ফুসফুসেও। অন্যান্য বায়ু দূষকের মতো একইধরনের প্রভাব দেখা যায় এক্ষেত্রে। কিন্তু মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের স্থায়িত্ব বা টিকে থাকার সময়কাল ঠিক কতটা, এর সমাধানই বা কী— সে ব্যাপারে এখনও অনিশ্চিত গবেষকরা। কারণ পরিবেশ থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক ছেঁকে বার করে আনা প্রায় দুঃসাধ্য প্রক্রিয়া।

তবে মাইক্রোপ্লাস্টিকের এই প্রভাবগুলি বা কোন খাদ্যের মধ্য দিয়ে এই ধরনের দূষকের ‘সংক্রমণ’ হচ্ছে মানবদেহে— তা জানা গেলে পরবর্তীকালে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে মাইক্রোপ্লাস্টিক সমস্যাকে। সে ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী গবেষকরা…

আরও পড়ুন
শুধু সমুদ্রই নয়, মাইক্রোপ্লাস্টিকে ছেয়েছে মাটিও

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
চুম্বকের সাহায্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক অপসারণ, নেপথ্যে আইরিশ যুবক