দৈর্ঘ্য প্রায় ২ সেন্টিমিটার! আবিষ্কৃত হল বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাকটেরিয়া

ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গি— এই কথাগুলির সঙ্গে আবশ্যিকভাবেই চলে আসে অণুজীব। আসলে পরিবেশে এই ধরনের জীবের অস্তিত্ব থাকলেও, খালি চোখে দৃশ্যমান নয় তারা। আর সেই কারণেই অণুজীবের তালিকায় জায়গা হয়েছে তাদের। তবে সম্প্রতি গবেষকরা এমনই এক ব্যাকটেরিয়ার (Bacteria) হদিশ পেয়েছেন, যা দেখার জন্য মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজন পড়ে না কোনো। দিব্যি খালি চোখেই বোঝা যায় তাদের উপস্থিতি!

টি ম্যাগনিফিকা। ক্যারিবিয়ান গ্র্যাডটেরের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া গেছে এই অদ্ভুত ব্যাকটেরিয়াটিকে। যার দৈর্ঘ্য ০.৭৮ ইঞ্চি। অর্থাৎ, ২ সেন্টিমিটার। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে সেটিকে কোনো অঙ্গুরিমাল প্রাণী হিসাবেই মনে করেছিলেন গবেষকরা। তবে খুব দ্রুতই ভাঙে সেই ভুল। সংশ্লিষ্ট প্রাণীটির কোষ এবং চরিত্রের বিশ্লেষণ জানা দেয় আদতে সেটি একটি ব্যাকটেরিয়া। এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাকটেরিয়া হিসাবেই চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা।

সাধারণত যেকোনো ব্যাকটেরিয়াই প্রোক্যারিওটিক প্রাণীদের তালিকায় পড়ে। তাদের দেহকোষের গঠন যেমন সাধারণ হয়, তেমন আকারও হয় ছোটো। অন্যদিকে উন্নত প্রাণীদের দেহকোষ অনেকটাই জটিল হয়। সদ্য-আবিষ্কৃত ব্যাকটেরিয়াটির ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু অন্যরকম। তাদের দেহে একইসঙ্গে প্রোক্যারিওটিক এবং ইউক্যারিওটিক প্রাণীর বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেছেন গবেষকরা। 

গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই ব্যাকটেরিয়ার দেহকোষে পাতলা ঝিল্লির আস্তরণে সংরক্ষিত থাকে ডিএনএ। পাশাপাশি সদৃশ আরও একটি থলিতে থাকে দেশের ৭০ শতাংশ জল। যা অনেকটা সাইটোপ্লাজমের সমতুল্য। অন্য কোনো প্রাণীকে আক্রমণ করার জন্য এই জলভরা থলিটিই হাতিয়ার এই বিশেষ ব্যাকটেরিয়ার। সংশ্লিষ্ট তরল পদার্থটির মাধ্যমেই প্রোটিন ও অন্যান্য টক্সিন পদার্থ তারা ছড়িয়ে দেয় মিডিয়ামের দেহে। 

বিবর্তনের সূত্র মেনে সরল এককোষী প্রাণী থেকেই জন্ম নিয়েছে জটিল বহুকোষী প্রাণীর। এই বিবর্তনবাদেরই মধ্যবর্তী অন্যতম একটি অধ্যায় এই ব্যাকটেরিয়া। অনেকটা হংসচঞ্চুর মতো মিসিং লিঙ্কও বলা যেতে পারে এটিকে। যা এতদিন দৃষ্টিগোচর ছিল মানুষের থেকে। কিউশু ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকদের সৌজন্যে এবার প্রকাশ্যে এল তার অস্তিত্বের কথা। সম্প্রতি বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্রটি…

Powered by Froala Editor

More From Author See More

Latest News See More