প্লাজমা দিতে রাজি তবলিঘি জামাত সদস্যরাও, সম্প্রীতির উদাহরণ দিল্লিতে

দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকেজে জনসমাবেশ নিয়ে বেশ শোরগোল উঠেছিল সারা দেশে। ওই সমাবেশে উপস্থিত থাকা অনেকের দেহেই মিলেছিল করোনার উপস্থিতি। অভিযোগ উঠছিল একাধিক অসহযোগিতার। তবে এবার করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে এলেন তাঁরাই।

আরও পড়ুন
করোনা প্রতিরোধে প্লাজমা ট্রিটমেন্টের ছাড়পত্র পশ্চিমবঙ্গে

এআইএমএসে ১৪২ জন তবলিঘি জামাত সদস্য ভর্তি ছিলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। চিকিৎসা চলছিল তাঁদের। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২৯ জন। এবার অন্যান্য রোগীদের সুস্থ করে তুলতে বিনাদ্বিধায় এগিয়ে এলেন তাঁরা। তাঁরাই রক্ত দেবেন প্লাজমা থেরাপির জন্য। কিছুদিন আগে ডাঃ সুষমা ভাটনাগর, ওই হাসপাতালের চেয়ারপার্সন জানান, অনুরোধ করার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান ওই আক্রন্তরা। এখনও প্রস্তুতি চলছে পরবর্তী পর্যায়ের। গবেষণার কাজে ভবিষ্যতেও যে রক্ত পাওয়া যাবে, একথা জানিয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন
দেশের একমাত্র সংক্রমণমুক্ত রাজ্য সিকিম, অক্টোবর পর্যন্ত নিষিদ্ধ পর্যটকদের প্রবেশ

ওই জমায়েতের অধিকাংশ সদস্যই এসেছিলেন দিল্লির বাইরে থেকে। অনেকে আবার বিদেশ থেকেও। লকডাউনের কারণে ফিরতে পারেননি বাড়িতে। তাই সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে সরকারই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছিল সেখানকার ৪ জন আক্রান্তের উপরে। প্রতি ক্ষেত্রেই আশানুরূপ ফল মিলেছে।

আরও পড়ুন
লকডাউনে খুলতে পারে স্থানীয় দোকান-বাজারগুলি, ঘোষণা কেন্দ্রের

জানানো হয়, ওই চার ব্যক্তির মধ্যে দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে খুব শীঘ্রই। একজনকে আইসিইউ থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে নর্মাল বেডে। এবং আরেকজনের অবস্থার উন্নতি হলেও, এখনও বেশ আশঙ্কাজনক। কেজরিওয়াল জানান, আক্রান্ত সকলের উপরেই এই থেরাপি প্রযোজ্য হতে পারে। তবে যাঁরা ভেন্টিলেটরে রয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে আগে প্রয়োগ করা হচ্ছে এই প্রাণদায়ী প্রযুক্তি।

আরও পড়ুন
ভারতে সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার, অনুমান দুই জার্মান বিজ্ঞানীর

সম্প্রতি ইরান এই প্লাজমা থেরাপির ব্যবহারে করোনার সংক্রমণ কমিয়ে এনেছে বলে দাবি করেছে। এই পদ্ধতিই অবলম্বন করছে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলিও। তাই যথেষ্ট আশার আলো দেখাচ্ছে এই প্লাজমা থেরাপি।

আরও পড়ুন
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৫০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ, ঘোষণা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সুস্থ হয়ে ওঠা তবলিঘি জামাত সদস্যরা এগিয়ে আসায় সুবিধা হবে গবেষণা এবং চিকিৎসার কাজের। কারণ দিল্লিতে প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত হয়েছিলেন তাঁরাই। তাই আগেই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, অন্যান্য সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে। একাধিকবার নেগেটিভ এসেছিল তাঁদের কোভিড-১৯ রিপোর্ট। কাজেই তাঁদের রক্তের প্লাজমা অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। যা দেখাচ্ছে নতুন আশার আলো। এই সম্প্রীতির ছবি আশ্বাস দিচ্ছে, দুর্দিন কাটবে শীঘ্রই। শুধু বেঁধে বেঁধে থাকতে হবে সকলকে।

More From Author See More