ডিএনএ ব্লকের শৃঙ্খলসজ্জার পরিবর্তনেই জন্ম নেয় নতুন জিন, বিবর্তনের রহস্যভেদ বিজ্ঞানীদের

বিল্ডিং ব্লকের সঙ্গে সকলেই অল্পবিস্তর পরিচিত। ছোটো ছোটো লেগোর টুকরো বিভিন্নভাবে সাজালেই কখনো তা আকার নিত গাড়ির, কখনো বা মানুষের প্রতিকৃতির। সাম্প্রতিক গবেষণা দেখাল, ঠিক একই রকম রহস্য লুকিয়ে রয়েছে বিবর্তনের মধ্যেও। আর বিবর্তনের ক্ষেত্রে সেই বিল্ডিং ব্লকের কাজ করছে জিনের উপাদানগুলিই। তাদের শৃঙ্খলসজ্জার বদলের ফলেই ক্রমে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে প্রাণীদের জিন।

সম্প্রতি ‘সায়েন্স’ জানার্লে প্রকাশিত হয়েছে ‘রিক্রুটমেন্ট এভোলিউশন অফ ভার্টিব্রেট ট্রান্সক্রিপশন ফ্যাক্টরস বাই ট্রান্সপোসেস ক্যাপচার’ নামের এই গবেষণাপত্র। মূল গবেষক র‍্যাচেল কসবি জানাচ্ছেন, জিনের উপাদান সংমিশ্রণের এই প্রক্রিয়া পরিচিত ‘এক্সন শাফলিং’ নামে। এই প্রক্রিয়ায় ডিএনএ সিকোয়েন্সের কার্যকারী ব্লকগুলি নতুনভাবে সজ্জিত হয়। একটি বিশেষ প্রোটিন গঠনের মাধ্যমে বিদ্যমান জিনকে পরিণত করে নতুন জিনে। 

তবে এক্সন সাফলিং একটি দীর্ঘ প্রস্তাবিত তত্ত্ব। সাম্প্রতিক গবেষণা সেই তত্ত্বকেই দেখাল প্রমাণ করে। গবেষণায় দেখা যায়, ‘জাম্পিং জিনি’ বা ‘ট্রান্সপোসন’ নামের একটি উপাদানই নতুন জিন গঠনে সহায়তা করে। 'ট্রান্সপোসন' ক্রোমোজমের মধ্যে থেকে বিভিন্ন জেনেটিক উপাদানগুলি কেটে এনে জুড়ে দেয় ডিএনএ শৃঙ্খলের অন্য অংশে। আর সেই কারণেই চরিত্র পাল্টে যায় জিনের। ঘটে বিবর্তন।  

সমীক্ষাটিতে মূলত টেট্রোপড বা চতুষ্পদ মেরুদণ্ডী প্রাণীদের ওপরে নজর দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। প্রাথমিক সমীক্ষায় পাঁচ শতাধিক চতুষ্পদ মেরুদণ্ডী প্রজাতির জিনোমের সিকোয়েন্সের বিশ্লেষণ করেন তাঁরা। এই ঘটনা শুধু মানুষই নয়, লক্ষ করা গেছে সরীসৃপ, পাখি, বাদুড়, ব্যাঙ এবং কোয়ালাদার মধ্যেও। ৩৫ কোটি বছর ধরেই মেরুদণ্ডীদের বিবর্তন হয়ে আসছে এই পদ্ধতিতে, এমনটাই বিশ্বাস গবেষকদের। মানুষের ক্ষেত্রে এইভাবে জন্ম নেওয়া মোট ৪৪টি জিনের অস্তিত্বের কথাও জানিয়েছেন তাঁরা…

আরও পড়ুন
নাক ডাকা বন্ধ করবে এই যন্ত্র, তাক লাগালেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
‘জম্বি ট্রি’-র রহস্যভেদ, গাছেদের সমাজব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত মার্কিন বিজ্ঞানীর

Latest News See More