ইতিহাসে কিছু দ্রুততম টেস্ট জয়, তালিকায় রয়েছে ভারতও

/৭

হাতে ছিল এখনও তিনদিন। কিন্তু তার আগেই শেষ হয়ে গেল বাইশ গজের যুদ্ধ। আহমেদাবাদের মাটিতে দ্বিতীয় দিনেই জয় তুলে নিল ভারত। আরও একবার ইতিহাসের সাক্ষী হল মোতেরা। ডিনার ব্রেকের আগে জেতার জন্য ভারতের দরকার ছিল মাত্র ৩৮ রান। বিরতির পর আক্রামণাত্মক মেজাজেই খেলা শুরু করে কোহলির দল। মাত্র আট ওভারের মধ্যেই লক্ষ্য মাত্রায় পৌঁছে যায় ভারত। দু’দিন মিলিয়ে মাত্র ১৪২ ওভারের মধ্যেই শেষ হল ঐতিহাসিকও এই ক্রিকেট ম্যাচ।

/৭

তবে এর আগেও আরও দু’বার এমনই ক্ষিপ্রতায় জয় তুলে নিয়েছিল ভারত। দু’দিনের মধ্যেই গুটিয়ে ফেলেছিল টেস্ট ম্যাচ। ২০১৮ সালের কথা। সে বছর জুলাই মাসে আফগানিস্থানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ভারত। প্রথম ইনিংসে মুরলি বিজয় (১০৫) ও শিখর ধাওয়ানের (১০৭) ব্যাটে নির্ভর করে ৪৭৪ রানের পাহাড় তৈরি করে ভারত। প্রথম ইনিংসে ১০৯ রান করে আফগান দল। ফলো অনে দ্বিতীয় ইনিংসের সংগ্রহ ১০৩। ভারতকে নামতে হয়নি দ্বিতীয় ইনিংসে। ১৭২ ওভারের মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তানে খেলা একমাত্র টেস্ট ম্যাচ।

/৭

ঠিক তার পরের বছরের কথা। কলকাতার ইডেনে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার খেলা গড়িয়েছিল মাত্র ১৬২ ওভার। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সব কটি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১০৬ রান। জবাবে ভারত ৩৪৭ রানে ডিক্লেয়ার করে প্রথম ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসেও ইডেনের মাটিতে দানা বাঁধতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৯৫ রানেই থেমে যায় স্কোরকার্ড। ঐতিহাসিক সেই ম্যাচে দুই ইনিংসে সব মিলিয়ে ৭৮ রান দিয়ে একাই ৯ উইকেট শিকার করেছিলেন ইশান্ত শর্মা। টেস্টের সেরা খেলোয়াড় হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল তাঁকেই।

/৭

তবে ক্রিকেটের ইতিহাসে ক্ষুদ্রতম টেস্ট ম্যাচ হিসাবে বিবেচিত হয় ১৯৩২ সালে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার একটি ম্যাচ। খেলা চলেছিল মাত্র ৫ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট। এক কথায় অবিশ্বাস্য। সেই ম্যাচে ব্যাট করতে হয়নি ডন ব্র্যাডম্যানকে। বল করেননি ক্ল্যারি গ্রিমেটও। তাতেও দুটি ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা গুটিয়ে গিয়েছিল যথাক্রমে ৩৬ ও ৪৫ রানে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৩৬ রানের এই ইনিংসটিই আজও বিবেচিত হয় সংক্ষিপ্ততম ইনিংস হিসাবে।

/৭

তবে শুধু ১৯৩২-এর এই ম্যাচই নয়। টেস্ট ক্রিকেটে তারও আগে অঘটনের শিকার হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ থেকে ১৩২ বছর আগের কথা। ১৮৮৯-এর টেস্টে কেপ টাউনে সেবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিধ্বস্ত করেছিল ইংল্যান্ড। টসে জিতে ১২৩ ওভারে ইংল্যান্ড করে ২৯২ রান। জবাবে দুটো ইনিংস মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিল মাত্র ৯০ (যথাক্রমে ৪৭ ও ৪৩ রান)। খেলা হয়েছিল ২০০ ওভার। তবে তখন ওভার হত ৪ বলে। আজকের দিনের হিসাবে তা মাত্র ১৩২.৪ ওভার।

/৭

এর পর ১৯৩৫ সালের কথায় ফেরা যাক। ব্রিজটাউনে আয়োজিত ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ম্যাচটিকে টেস্ট ইতিহাসের অন্যরম ‘লো স্কোরিং’ ম্যাচ হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। প্রথম ইনিংসে ১০২ রান করে ওয়েস্টইন্ডিজ। উত্তরে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৮১ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তখন ক্যারিবিয়ানদের স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ৫১ রান। তবে ইনিংস ডিক্লেয়ার করেন অধিনায়ক। তৃতীয় দিনের শুরুতেই ১৬ ওভারের মধ্যে জয় তুলে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। ১১২ ওভারেই শেষ হয়ে গিয়েছিল টেস্ট ম্যাচটি।

/৭

এর বাইরে আরও একটি ম্যাচের কথা উল্লেখ না করলে চলে না। প্রথম দু'দিন বৃষ্টিতে গতি কমে যাওয়ায় তৃতীয় দিনে গড়ায় ম্যাচের ভাগ্য। ২০০ ওভারের সেই ম্যাচের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক রুদ্ধশ্বাস যুদ্ধ। ২০০৪ সালের মুম্বাইয়ে আয়োজিত ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট। চোটে ম্যাচের বাইরে অধিনায়ক সৌরভ। বদলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দ্রাবিড়। প্রথম ইনিংসে ভারতের ১০৪ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া করে ২০৩। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ২০৫ রান। ১০৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নেমে ৯৩ রানের মধ্যে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সে দলে ছিলেন গিলখ্রিস্ট, পন্টিং, হেডেন, মাইকেল ক্লার্ক— সকলেই। অস্ট্রেলিয়ার প্রতাপশালী সেই দলও যে ভারতের কাছে বশ্যতা স্বীকার করবে, তা অবিশ্বাস্য ছিল গোটা বিশ্বের কাছে…

Powered by Froala Editor

More From Author See More