ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক-সিরিয়ায় বাস্তুচ্যুতদের ছাদ দেবে কাতার বিশ্বকাপের অস্থায়ী কেবিন

২০১০ সাল। ফিফা ঘোষণা করে, ’২২-এর ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে কাতারে (Qatar)। আর তারপরই পুরোদমে শুরু যায় প্রস্তুতি। বিশ্বকাপের জন্য কাতারজুড়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করে, বিশেষ তৎপরতায় গড়ে তোলা হয় ৮টি ফুটবল স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ দেখতে আসা ফুটবল-প্রেমীদের জন্য হোটেল হিসাবে নির্মিত হয় বিশেষ কেবিন। তবে এইসব স্টেডিয়াম বা কেবিনের অধিকাংশই ছিল অস্থায়ী এবং বহনযোগ্য (Portable)। অর্থাৎ, বিশ্বকাপে পরই তা সরিয়ে ফেলার বা ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা ছিল কাতার প্রশাসনের। তবে বিপর্যয়ের দিনে এইসব কেবিনই হয়ে উঠল অসংখ্য মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই।

গোটা বিশ্বজুড়েই বর্তমানে চর্চা চলছে তুরস্ক (Turkey) ও সিরিয়ার ভূমিকম্প নিয়ে। ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৪১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে তুরস্কে। এমনটাই জানাচ্ছে সে-দেশের প্রশাসন। করুণ অবস্থা সিরিয়াতেও। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন অজস্র মানুষ। তাছাড়াও লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত। এমনকি ভেঙে পড়েছে দেশের চিকিৎসা পরিসেবাও। এমত পরিস্থিতিতেই ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় বিশ্বকাপের জন্য নির্মিত অস্থায়ী, বহনযোগ্য কেবিনগুলি পাঠানোর মানবিক সিদ্ধান্ত নিল কাতার।

গত ১৩ তারিখই সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিশেষ পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিল কাতার প্রশাসন। জানানো হয়েছে, সিরিয়া এবং তুরস্ক— এই দুই দেশে সবমিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার কেবিন পাঠানো হবে কাতারের তরফে। এমনকি ইতিমধ্যেই ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্কে অস্থায়ী কেবিনগুলি পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করে ফেলেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। দোহা ছেড়েছে কেবিনবাহী বেশ কয়েকটি জাহাজ। আর কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো তা পৌঁছে যাবে তুরস্কে।

অস্থায়ী কেবিনগুলি শুধুমাত্র গৃহহীন ও বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দেবে, এমনটা নয় মোটেই। জরুরি তৎপরতায় গোটা তুরস্ক জুড়েই গড়ে তোলা হয়েছে বহু অস্থায়ী হাসপাতাল এবং চিকিৎসাকেন্দ্র। কাপড়ের তাঁবু খাটিয়েই সেখানে চিকিৎসার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনী ও বিপর্যয় মোকাবিলাকর্মীরা। সেক্ষেত্রেও অস্থায়ী চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরিতে বিশেষভাবে কাজে লাগবে এই কেবিনগুলি। সবমিলিয়ে বিপর্যয় বাগে আনতে তুরস্কের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে কাতার বিশ্বকাপের পর পরিত্যক্ত মোবাইল হাউসগুলি…

Powered by Froala Editor