মনের অতলে ঘাপটি মেরে থাকা আতঙ্কের স্মৃতি মুছে দেবে নাটক

আরিস্টটল লিখেছিলেন, ক্যাথারসিসের কথা। ট্রাজেডি দেখে দর্শকদের নাকি ভাবমোক্ষণ হবে। এই ‘ক্যাথারসিস’ শব্দটা নিয়ে তারপর কত্ত তর্ক-বিতর্ক পণ্ডিতদের। কারণ, শব্দটি আদতে চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে ধার করা। নাটক কি চিকিৎসা নাকি! অথচ, এত যুগ বাদে সত্যিই নাটকের মাধ্যমে মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে মানসিক নানা আতঙ্ক, ভয়, আঘাত ও যন্ত্রণার স্মৃতি। এক অর্থে এও তো চিকিৎসাই। এই পদ্ধতির পোশাকি নাম সাইকোড্রামা থেরাপি।

কীভাবে মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা নানা আতঙ্ক, আঘাতের স্মৃতি কিংবা ট্রমাকে মুছে দিচ্ছে সাইকোড্রামা? ভারতের অন্যতম প্রখ্যাত সাইকোড্রামাটিস্ট রশ্মি দত্ত জানাচ্ছেন, মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর কোনও ঘটনার স্মৃতিকে নাটকের মাধ্যমে বাইরে বের করে আনা হয়। আর, এর মধ্যে দিয়েই সেই ঘটনার সঙ্গে জুড়ে থাকা ভয়কেও নির্মূল করা সম্ভব। কোনও একজনকে প্রথমে বলা হয়, একটি পরিস্থিতি বা সিচুয়েশন বাছাই করতে। তারপর তিনি দর্শকদের থেকে একজন বা কয়েকজনকে বেছে নেন। এরপর শুরু হয় সেই পরিস্থিতিটির নাট্যরূপায়ণ। যিনি বাছলেন, তিনি নিজেই যদি প্রধান চরিত্র হন তাহলে নিজেই অবস্থাটিকে আরেকবার ফিরে দেখা যায়। কিংবা উল্টোদিকে থাকা চরিত্রাভিনেতার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটিকে দেখতে দেখতে অবচেতনেই বেরিয়ে আসতে থাকে ঐ ঘটনার স্মৃতির সঙ্গে লেপ্টে থাকা ভয়, আতঙ্ক ইত্যাদি। ১০-১৫ জনের এক-একটি দলের সাহায্যে এই নাটকের থেরাপি চলে ৪০-৪৫ মিনিট ধরে। এই থেরাপি ইমোশনাল কোশেন্ট বাড়াতেও সাহায্য করে।

মানসিক আতঙ্ক মুছে দিয়ে অসংখ্য মানুষকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছেন রশ্মি এবং অন্যান্য সাইকোড্রামাটিস্টরা। আর এই কাজে তাঁর অস্ত্র সাইকোড্রামা।