জার্মানির সমান আয়তনের বন-ধ্বংস ইন্দোনেশিয়ায়, বিলুপ্তির মুখে ওরাংওটাং-রা

‘হলদে-সবুজ ওরাংওটাং’—কয়েক বছর পর হয়ত ওরাংওটাং শব্দটার মানেই বুঝতে পারবে না কচি-কাঁচারা। তাদের অভিভাবকেরা বোঝাতে গিয়ে বলবেন, একটা প্রাণী ছিল এই নামে। আর নেই। বড় দ্রুতবেগে ‘আর না থাকার’ দিকেই যে ছুটছে ওরাংওটাং-দের কমতে আসা সংখ্যারা।

শেষ ২৫ বছরে ৭৬০ লক্ষ একর বনভূমি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়ায়! গোটা দেশের চারভাগের তিনভাগ বনভূমি! গোটা জার্মানি দেশটি ঢুকে যেতে পারে এমন আয়তনের বনভূমি। আর, এই বনভূমির সঙ্গে সঙ্গেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে বসেছে ওরাংওটাং-রাও। সুমাত্রান ওরাংওটাং-দের আগেই ‘ক্রিটিকালি এনডেনজার্ড’ বলে ঘোষণা করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনসার্ভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)। এবারে সেই তালিকায় ঢুকে পড়ল বোর্নিয়ান ওরাংওটাং-রাও।

আরও পড়ুন
গত ১৬ বছরে খুন হয়েছেন ১৭৩৮ জন পরিবেশকর্মী

ইন্টারন্যাশনাল অ্যানিমাল রেসকিউ (আইএআর)-এর চিফ এগজিকিউটিভ অ্যালান নাইট জানাচ্ছেন, বাসভূমি আর খাদ্য হুহু করে কমে আসাই ওরাংওটাং-দের সংখ্যা এত মারাত্মক হারে কমে আসার প্রধান কারণ। এইভাবে চললে আর মাত্র ১০ বছরের মধ্যেই গোটা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হবে ওরাংওটাং-রা, বলছেন নাইট।

ইন্দোনেশিয়ায় এখন অন্যতম লাভজনক ব্যবসা হল পাম তেল উৎপাদন। তার জন্য প্রয়োজন জমি। আর সেই কারণেই কেটে ফেলা হচ্ছে একরের পর একর রেইন ফরেস্ট। এত বিপুল পরিমাণ রেইন ফরেস্ট কেটে ফেলার পথে আইনি বাধা যাতে না আসে, তার জন্য সৃষ্টি করা হচ্ছে কৃত্রিম দাবানল। গতবছর মাত্র ৩ মাসের মধ্যে ৫টি কাউন্টির সমান আয়তনের রেইন ফরেস্ট এভাবেই দাবানলের গ্রাসে চলে গেছিল। এই রেইন ফরেস্টই ওরাংওটাং-দের বাসস্থান। আগুনে বা বনভূমি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় দ্রুত কমছে তাদের সংখ্যা। কখনও তাদের প্রাণ যাচ্ছে চোরাশিকারিদের হাতে। এই চোরাশিকার আর বনভূমি ধ্বংস আটকানো না গেলে ওরাংওটাং-দের বিলুপ্ত হওয়াও ঠেকানো যাবে না, বলছেন পরিবেশবিদ, প্রাণী-গবেষকরা।