বিষ্ণুপুরে মাটি খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার প্রাচীন সৌধ, লুকিয়ে কোনো অজানা ইতিহাস?

ইতিহাসের শহর বিষ্ণুপুর। তার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে মল্ল রাজবংশের ইতিহাস। আজ থেকে হাজার বছরেরও বেশি আগে পত্তন হয়েছিল সেই রাজত্বের। টেরাকোটার অসংখ্য মন্দির তার স্মৃতি আজও বহন করে চলেছে। তবে সম্প্রতি সেখানেই পাওয়া গেল আরও একটি প্রাচীন পুরাকৃতির নমুনা। আর তাও বেশ আশ্চর্যজনকভাবেই।

বিষ্ণুপুর মিউজিয়ামের তত্ত্বাবধায়ক তুষার সরকার জানান, “গত সপ্তাহের শেষদিকে জানতে পারি, কালাচাঁদ মন্দিরের আশেপাশে কোথাও একটা নির্মাণকাজের জন্য জেসিবি দিয়ে মাটি কাটতে কাটতে প্রাচীন দেওয়ালের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। পরে সেখানে গিয়ে ইটের গঠন দেখে বুঝতে পারি, যে সৌধটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে সেটি মোটামুটি সপ্তদশ শতকের মল্ল রাজাদের তৈরি।” স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য এই সৌধটিকে মন্দির বলেই মনে করছেন। কালাচাঁদ মন্দির সংলগ্ন বেশ কিছু জোড়া মন্দির আজও টিকে আছে। তার মধ্যে একটি কোনোভাবে মাটির নিচে চাপা পড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। তবে এটি যে আদৌ কোনো ধর্মীয় সৌধ, তেমন কোনো নিদর্শন মেলেনি বলেই জানিয়েছেন তুষার সরকার।

ইতিমধ্যে বিষ্ণুপুর মিউজিয়ামের পুরাতাত্ত্বিক আধিকারিকদের সাহায্যে শুরু হয়েছে গবেষণা। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনও সবরকমভাবে এই গবেষণায় সাহায্য করতে প্রস্তুত। ইতিমধ্যে নির্মাণকার্য বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর আবারও এমন একটা ঘটনায় জনমানসেও বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। “তবে সম্পূর্ণ খননকার্য পরিচালনা করার মতো পরিকাঠামো তো আমাদের নেই। তার জন্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সাহায্য দরকার।” বললেন তুষারবাবু। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টা জানিয়েছেন তিনি। যদিও তিনি জানেন না সেই আবেদনে আদৌ সাড়া মিলবে কিনা। “বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজবংশের ইতিহাস তো অজানা নয়। তার প্রায় সমস্ত তথ্যই আমাদের জানা। ফলে এএসআই এই গবেষণার জন্য সাহায্য করবেন কিনা, তাতে সন্দেহ আছে।” তুষারবাবুর কথার সুরে আক্ষেপ স্পষ্ট। আরও একটি সৌধের প্রকৃত চরিত্র বুঝতে পারলে যে বাংলার এই প্রাচীন শহরের ইতিহাস আরও সুস্পষ্ট চেহারা নিত, সে-কথা বলাই বাহুল্য।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
চাষের জমি থেকে উদ্ধার প্রাচীন সূর্যমূর্তি, চাঞ্চল্য অন্ধ্রপ্রদেশে

More From Author See More