চুরির টাকায় দরিদ্রদের সাহায্য! হ্যাকার, নাকি হালের ‘রবিনহুড’?

রবিনহুডের কথা মনে আছে? বিত্তশালী থেকে ক্ষমতাশালী বিশপও তাঁর ভয়ে তটস্থ থাকত সব সময়। তবে ‘কুখ্যাত’ এই দস্যুই দরিদ্রদের কাছে ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর। লুণ্ঠিত সম্পদ ভোগ না করে অর্থহীনদের হাতেই তুলে দিতেন রবিনহুড। চতুর্দশ শতাব্দী থেকে চলে আসা এই লোককথাই যেন বাস্তবের ছবি হয়ে ধরা দিল প্রায় ৭ শতক পরে। তবে আজকের রবিনহুডের হাতিয়ার তির-ধনুক কিংবা তরবারি নয়। বরং ইন্টারনেট। হ্যাঁ, সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম সারির কিছু সমাজসেবী সংস্থায় অর্থ সাহায্য পাঠাল হ্যাকাররাই।

তবে স্বাভাবিক ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার নয়। ডার্ক ওয়েবে ক্রিপ্টো কারেন্সি বিটকয়েনের মাধ্যমেই এই আর্থিক অনুদান পাঠিয়েছে হ্যাকাররা। যার মোট আর্থিক মূল্য ১০ হাজার মার্কিন ডলার। আর্থিক অনুদানের সঙ্গেই গিয়েছে একটা ছোট্ট বার্তাও। ‘পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে তোলার উদ্যোগ’। যে হ্যাকারদের নাম জড়িয়ে থাকে কোটি কোটি টাকার ‘ডাকাতি’-র সঙ্গে। তাদের এমন ব্যবহারে খানিকটা আশ্চর্যই অধিকাংশ সাইবার সিকিওরিটি সংস্থা। সন্দেহের চোখেই তাঁরা দেখছেন বিষয়টিকে।

মোট দুটি সংস্থায় এই আর্থিক অনুদান পাঠায় হ্যাকাররা। তার মধ্যে চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল ফিরিয়ে দিয়েছে এই অনুদান। ‘লুণ্ঠিত’ সম্পদ কোনোমতেই নিতে রাজি নয় তারা। আরেক মার্কিন সংস্থা ‘দ্য গিভিং ব্লক’ গ্রহণ করেছে এই অনুদান। তবে হ্যাকারের পরিচয় যদি সত্যিই সামনে আসে, তবে এই অর্থ তারাও ফিরিয়ে দেবে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে এই অর্থ স্থানান্তরিত হওয়ার কারণেই তা গ্রহণ করেছে বলে জানান তাঁরা।

সব মিলিয়ে পুলিশ, অলাভজনক সংস্থা সবাই-ই হন্যে হয়ে খোঁজ চালাচ্ছে এই বেনামি দাতার। আন্তর্জাতিক পুলিশ জানিয়েছে, এই হ্যাকিং অ্যাকাউন্টটি তৈরি হয়েছে সদ্য। তবে সন্দেহ থাকছে তাদের সঙ্গে যোগ থাকতে পারে কোনো বড়ো গ্যাংয়েরও। বড়ো কোনো চুরির থেকে প্রশাসনের চোখ এড়াতে দৃষ্টিবিভ্রম করতে চাইছে তারা। কোডিংয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই অজানা মুখ সত্যিই কি একুশ শতকের রবিন হুড, নাকি রবিনহুডের মুখোশ পরা কেউ? উত্তর এখনও অস্পষ্ট সকলের কাছেই...

আরও পড়ুন
ভারতে সাইবার হানার ছক চিনের, আঘাত আনতে পারে আজই

Powered by Froala Editor