হাতে লেখা চিঠি ফেরাতে বিশ্বজুড়ে সম্পর্ক বুনছেন পারমিতা

হাতে লেখা পুরোনো চিঠির গন্ধ আজকালকার হোয়াটসঅ্যাপ প্রজন্ম চেনেই না, কখনও বোঝেইনি ডাকপিওনের জন্য অপেক্ষা। দেখেনি উপচে পড়া ডাকবাক্সের নস্টালজিয়াকে। আমরা যতই চলমান আধুনিকতায় গা ভাসাই না কেন, এই সব চিঠিই ঋণী করে রাখে আমাদের। এই সবকিছুকে মাথায় রেখেই পারমিতা বরদলুই 'লেটার ফ্রম আ স্ট্রেঞ্জার, ইন্ডিয়া' নামে একটি উদ্যোগ শুরু করেন। যাতে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন মানুষ হাতে লেখা চিঠি পাঠানো শুরু করেন, পাঠান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।

অসমে মেয়ে পারমিতা ফেসবুকে একটি কমিউনিটি তৈরি করেছিলেন, যার সদস্যরা সারা পৃথিবীর অন্তত  ১০০ জনের কাছে হাতে লেখা চিঠি পাঠান প্রতি দু'মাসে। বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে চিঠি পৌঁছে দেওয়া এবং তারপর চিঠিগুলির সাড়া দেওয়া - প্রতিটি কাজই করা হয় যত্ন নিয়ে। এই উদ্যোগের পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করেন স্বেচ্ছাসেবকরা, কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই।

পারমিতা জানান, তাঁরা তাদের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দিয়ে থাকেন। সবটাই ব্যক্তিগত পছন্দের উপর করে পাঠানো হয়। চিঠি প্রেরক ও গ্রাহকের বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে। কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হয় এই উদ্যোগে। প্রথমত, লেখককে সহানুভূতিশীল হতে হবে চিঠিতে এবং কোনোরকম রায় যেন না দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, নিজস্ব জীবনের পাঠ ভাগ করে নিতে পারেন লেখক। তৃতীয়ত, প্রথম চিঠির পর প্রেরক ও গ্রাহকের যোগাযোগ ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভর করবে।

বিশ্বের যে-কোনো প্রান্ত থেকে যে-কেউ চিঠি পেতে পারেন অনুরোধের ভিত্তিতে। আপাতত পারমিতার লক্ষ্য এই প্রক্রিয়াটিকে যতটা সম্ভব নিরাপদ রাখা। আরও একটি অনন্য পরিকল্পনা আছে তাঁর, প্রাপ্ত চিঠিগুলি থেকে নির্বাচিত কিছু চিঠির সংকলন একটি বই আকারে প্রকাশ করা। যা নিশ্চয়ই সফল হবে একদিন।