মাত্র ৫০ টাকায় ডায়ালিসিস! লকডাউনে প্রশংসনীয় উদ্যোগ কলকাতার চিকিৎসকের

প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ছে চিকিৎসার খরচ। তার মধ্যে মহামারী করোনার কারণে প্রচলিত পরিষেবার খরচ বাড়িয়েছে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল। তাঁদের দাবি, স্যানিটাইজেশন এবং পিপিই খাতে যে খরচ বেড়েছে তার কারণেই বেড়েছে চিকিৎসার খরচ। কিন্তু এই আকালেও কিছু মানুষ আছেন যাঁরা প্রতিটি মানুষের কাছে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কলকাতা শহরে আছেন তেমনই একজন চিকিৎসক। তাঁর ছোটো বেসরকারি হাসপাতালে এই মহামারীর সময়ে কমেছে চিকিৎসার খরচ। এই দুর্মূল্যের বাজারেও সেখানে একজনের ডায়ালিসিসের খরচ মাত্র ৫০ টাকা।


মধ্যকলকাতার মহম্মদ ইসহাক রোডের উপর অবস্থিত কলকাতা স্বাস্থ্য সংকল্প। হাসপাতালের কর্ণধার ডা. ফুয়াদ হালিম। তাঁর বাড়ির একটা অংশেই তৈরি এই পাঁচ শয্যার হাসপাতাল। সঙ্গে ৯টি ডায়ালিসিস মেশিন। শহরের অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে যেখানে ডায়ালিসিসের খরচ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, সেখানে স্বাস্থ্য সংকল্প দাবি করে মাত্র ৩৫০ টাকা। আর তাই কিডনির অসুখে ভুক্তভোগী বহু গরিব মানুষ এখানে আসেন চিকিৎসার জন্য।


এরই মধ্যে এসে পড়েছে করোনা আতঙ্ক। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চিকিৎসার এবং পরিবহনের খরচ। ফলে বহু রোগীর আত্মীয়ই পড়েছেন বিপাকে। শুধুই গরিব মানুষ নন, এখন মধ্যবিত্তরাও আসতে শুরু করেছেন স্বাস্থ্য সংকল্পে। চাহিদা বাড়ার কারণে একটি বাড়তি মেশিন কিনতে হয়েছে ডা. হালিমকে। আর সেইসঙ্গে ঘটেছে আরও একটি পরিবর্তন। মহামারীর ফলে এখানে চিকিৎসার খরচ বাড়েনি, বরং এক ধাক্কায় কমে হয়েছে ৫০ টাকা। আর এই লকডাউনের বাজারে অন্তত ১৫০০ রোগীর ডায়ালিসিস হয়েছে এখানে। 


এখন চারিদিকে রোজগার বন্ধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জোগানও কম। প্রতিদিন জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে মানুষকে। কিন্তু অসুখ যে সময় দেখে আসে না। আর কিডনির অসুখে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত ডায়ালিসিস ছাড়া বেঁচে থাকাও অসম্ভব। তাই তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন ডা. ফুয়াদ হালিম।


গতবছরের লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের বিধানসভা স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের ছেলে ডা. ফুয়াদ হালিম। তবে এই সময়ের যুদ্ধ যেন তাঁকে অন্য ক্ষেত্রে জিতিয়ে দিল। মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকার জন্য তো প্রয়োজন শুধু একটু ভালোবাসা আর সহানুভূতি। এইটুকুই বর্তমান সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর একমাত্র অস্ত্র।

Powered by Froala Editor

More From Author See More