আদিগঙ্গার সংস্কারের জন্য বেঁধে দেওয়া হল ৩০ মাসের সময়সীমা

আর কিছুদিনের মধ্যেই প্রাণ ফিরে পেতে চলেছে আদিগঙ্গা। ৩০ মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিল কলকাতা পৌর সংস্থা। এর মধ্যেই পরিষ্কার করে ফেলা হবে আদিগঙ্গা বা টলি নালা। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ তো ছিলই। পৌরস্তরে উদ্যোগ শুরু হয় চলতি বছরের শুরুতেই। আর একাধিক আলোচনার ভিত্তিতেই স্থির হয়েছে সময়সীমা।

আরও পড়ুন
রবীন্দ্রনাথের ‘তন্বী ইছামতী’ নদীতে আজ আবর্জনার স্তূপ

আজ যেটা হুগলি নদী, একসময় তার মূল ধারাই ছিল এই খালের উপর দিয়ে। তারপর ক্রমশ শুকিয়ে গিয়েছে আদিগঙ্গা। অষ্টাদশ শতকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উদ্যোগে শুরু হয় সংস্কারের কাজ। তখন এই খালের উপর দিয়ে ফেরি-পরিবহনের বন্দোবস্তও ছিল। কিন্তু কালক্রমে তা পরিণত হয় কলকাতার বর্জ্য নিকাশি নালায়। প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নালা মিশেছে বঙ্গোপসাগরে।

আরও পড়ুন
শুধুই পদার্থবিদ্যা নয়, বাংলার নদী-নালা নিয়েও দীর্ঘ গবেষণা করেছিলেন মেঘনাদ সাহা

রাজ্যের বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার শিকার হতে হয় আদিগঙ্গাকেও। শহর কলকাতার দূষণের কোপে পড়ে এখন আর তাতে কোনো স্রোত নেই। পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও দুর্গন্ধে টেঁকা দায়। নালার দুধারে অসংখ্য খোলা শৌচাগার, গরুর গোয়াল, শুয়োরের খোঁয়াড়। আর আদিগঙ্গার এই চেহারায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ পরিবেশবিদরা। তবে অবশেষে উদ্যোগ নিল পৌর সংস্থা। বর্জ্য অপসারণের জন্য ইতিমধ্যে দুটো কম্পোস্টার মেশিন বসানো হয়েছে। এই মাসের মধ্যেই আরো দুটো মেশিন বসানো হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র কাউন্সিলের সদস্য দেবব্রত মজুমদার। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে গোয়াল ও খোঁয়াড় সরিয়ে ফেলার কাজ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খোলা শৌচাগারগুলিও। ৯৪, ৯৭ ও ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে বসেছে তিনটি সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। আর এই কাজের জন্য অর্থসাহায্য চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের 'নমামি গঙ্গে' প্রকল্প থেকেও।

আরও পড়ুন
নদী পরিণত হচ্ছে নালায়, জমছে আবর্জনা – ক্ষুব্ধ আসানসোলের বাসিন্দারা

রাজ্যের নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে সরব পরিবেশবিদরা। সাম্প্রতিক বেশ কিছু রিপোর্টেও উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। দূষণ নিয়ন্ত্রণে জন্য সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের এগিয়ে আসা উচিত। কলকাতা পৌর সংস্থার এই উদ্যোগ অবশ্যই স্বাগত জানানোর মতো। সেইসঙ্গে কলকাতাবাসীর কাছে অবশ্যই বিশেষ আশার খবর।