অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেন

অবশেষে শেষ হল প্রতীক্ষা। হাতে এল মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল। শেষ হয়নি ভোট গণনা। তবে তার আগেই শেষ হাসি ফুটল জো বাইডেনের ঠোঁটে। ঐতিহাসিক জয়ে চার বছর পর ক্ষমতায় ফিরল ডেমোক্র্যাটরা।

সমীক্ষায় কিছুটা হলেও উনিশ-কুড়িতে বাইডেনকেই এগিয়ে রেখেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। গণনা চলাকালীন ভোটের পরিস্থিতি সেদিকেই এগোচ্ছিল ধীরে ধীরে। বৃহস্পতিবার রাতেই মিচিগান জয়ের পর ট্রাম্পের থেকে ৫০টি ইলেকটোরাল ভোটে এগিয়ে ছিলেন জো বাইডেন। তবে খেলা ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল।

বাকি থাকা পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে ট্রাম্প এগিয়ে ছিলেন চারটিতে, একটিতে বাইডেন। তবে পোস্টাল ভোট গণনা শুরু হওয়ার পরই উলটে যায় ট্রেন্ড। রিপাবলিকান গরিষ্ঠ পেনসিলভেনিয়া এবং জর্জিয়াতেও এগিয়ে যান ডেমোক্র্যাটরা। ভোট গণনা বন্ধ করার জন্য সুপ্রিমকোর্টের কাছে আবেদন জানান বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সেই দাবি খারিজ করে দেয় আদালত। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনে বাইডেনের দরকার ছিল মোট ৫৩৮টির মধ্যে ২৭০টি আসন। শনিবার বাইডেনের জয় আসে পেনসিলভেনিয়াতে। বাইডেনের প্রাপ্ত মোট আসনের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮৪। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের সংগ্রহে এখনও অবধি ২১৪টি আসন। তবে নর্থ ক্যারোলিনা ছাড়া এখনও অবধি জর্জিয়া এবং নাভাডা প্রদেশে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। কাজেই আরও বাড়তে পারে আসন সংখ্যা।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড তৈরি করলেন জো বাইডেন। এখনও অবধি সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁর সেই রেকর্ডকে ছাপিয়ে যান বাইডেন। সেই সংখ্যা যে আরও বাড়তে চলেছে বাকি গণনায়, তা বলাই বাহুল্য।

অভিবাসী, নারী এবং বর্ণবৈষম্যের কারণে বারবার বিরূপ মন্তব্যের জন্য বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পরও নির্বাক থাকায় রোষের মুখে পড়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি। গণ আন্দোলনের ভয়ে লুকাতে হয়েছিল আন্ডারগ্রাউন্ড শেল্টারেও। পাশাপাশি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গত চার বছরে এসেছিল মহিলাদের প্রতি যৌন হেনস্থার একাধিক অভিযোগও।

আরও পড়ুন
১৫০ বছর ধরে মার্কিন নির্বাচনের ‘প্রতীক’ হাতি আর গাধা; কোন গল্প লুকিয়ে এর পিছনে?

প্রথম থেকেই ট্রাম্পের তুরুপের তাস ছিল শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য বিস্তার এবং রিয়েল এস্টেট ও ইন্ডাস্ট্রির জগতে বিপ্লব নিয়ে আসা। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট বাইডেনের হাতিয়ার ছিল পরিবেশ। গত কয়েক বছরে আবহাওয়া পরিবর্তন এবং তার প্রতি মার্কিন প্রশাসনের গা ছাড়া মনোভাবকে বার বার সমালোচনা করেছিলেন বাইডেন। সেইসঙ্গে মহামারীর আবহে ট্রাম্পের একের পর এক ভুয়ো আশ্বাসকেও বিঁধেছিলেন তিনি। ট্রাম্পের শেষ কয়েকটি জনসভায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের রিপোর্টও হয়ে উঠেছিল বাইডেনের আরও এক অন্যতম হাতিয়ার।

কয়েক মাস আগেই জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে দলবদ্ধভাবে রাস্তায় নেমেছিলেন মার্কিন নাগরিকরা। স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন একাধিক তারকাও। ‘উই উইল ভোট ইউ আউট’ প্ল্যাকার্ড হাতেও দেখা যায় তাঁদের। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই সেই সম্ভাবনাই সত্যি হয়ে ফিরে এল একশো শতাংশ।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ভোটে কারচুপি, ডুয়েল কিংবা অতর্কিত মৃত্যু; মার্কিন নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে হাজারো কালো অধ্যায়