স্পষ্ট ও নির্ভুল বাংলা তাঁর, ভালোবাসেন রসগোল্লা-ইলিশ - জাপানি তরুণীর ভিডিও ভাইরাল

চোখে চশমা, ফরসা, ছোট করে কাটা চুল। দাঁড়িয়ে আছেন এক জাপানি তরুণী। জাপানি হলে কী হবে, অনর্গল বলে যাচ্ছেন বাংলা ভাষা। কেটে কেটে, কষ্ট করে নয়, রীতিমত স্পষ্ট উচ্চারণে। শুধু শুনে বোঝাই যাবে না যে তিনি একজন ভিনদেশি। এরকমই একটি ভিডিও ভাইরাল হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতেই আপ্লুত আপামর বাঙালি।

সম্প্রতি অপূর্ব দাস তাঁর নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি ভিডিও দিয়েছিলেন। ক্যাপশনেই খানিক আন্দাজ দিয়ে রেখেছিলেন বিষয়বস্তুর। ভিডিও শুরু হতেই ক্যামেরার সামনে এলেন সাকুরা ইশিকাওয়া। জাপানে টিসিএসের একজন কর্মী। ইংরেজিতেই কথাবার্তা হবে, এমনই ধারণা ছিল। কিন্তু গোটা ভিডিওটি করা হল বাংলায়! অপূর্ব-র সঙ্গে স্পষ্ট বাংলায় কথা চালিয়ে গেলেন সাকুরা।

https://www.facebook.com/tunkai1980/videos/3006507702722352/?t=0

সামার প্রোগ্রামের জন্য কলকাতায় মাস দুয়েকের জন্য এসেছিলেন সাকুরা। তখনই বাংলার প্রেমে পড়ে যান। ভাষাটাকে আরও ভালোভাবে জানার জন্য ভর্তি হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করেন তিনি। আয়ত্ত করেন বাংলা। তারপর হিন্দি শেখার জন্য দিল্লিতেও চলে গিয়েছিলেন তিনি। নিত্য নতুন ভাষা শেখাই যে তাঁর অন্যতম নেশা!

বাংলা আর হিন্দির মধ্যে কোনটা ভালো লাগল? উত্তরে হেসে জবাব দেন, বাংলাই তাঁর কাছে সেরা। এই ভাষা অনেক সমৃদ্ধ, যেখানে নিজের অনুভূতি বোঝানো যায়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে এইরকমই বলছিলেন সাকুরা। বাংলা সাহিত্য, সিনেমা— সবকিছুই পড়েন তিনি। ফেলুদাও পড়েছেন। দেখেছেন ‘পথের পাঁচালী’ও। আর, রবীন্দ্রনাথ? হ্যাঁ, তিনিও আছেন প্রবলভাবে। মিষ্টি হেসে জানিয়ে দেন সাকুরা। জানান রসগোল্লা ও ইলিশ-প্রিয়তার কথা।

বিদেশিরা যে বাংলাকে কতটা আপন করে নেন, সেই উদাহরণ আমরা অনেক সময়ই দেখেছি। এর আগে আমরা দেখেছি মাকি কাজুমি'কে। সাধন দাস বৈরাগ্য ও বাউল গানের টানে চলে এসেছিলেন বাংলায়। এখানকার সংস্কৃতি, সাহিত্য, খাবার— সবকিছুকে আপন করে নিয়েছেন। সম্প্রতি জানা গেল সাকুরা ইশিকাওয়ার কথাও। দুর্ভাগ্য, এরপরেও আমাদেরই চারপাশে চারপাশে শুনতে হয় “আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না।”

More From Author See More