ইসুরু— ভারতের প্রথম স্বাধীন গ্রাম

সালটা ১৯৪২। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ভারতের বুকেও ক্রমশ তীব্র হচ্ছে স্বাধীনতার আকাঙ্খা। এই সময়তেই মহাত্মা গান্ধী শুরু করলেন ভারত ছাড়ো আন্দোলন। দেশের প্রতিটা জায়গাতে ছড়িয়ে পড়ল বিপ্লব। ঠিক এই সময়ই খবরে উঠে এল কর্নাটকের একটি অখ্যাত গ্রাম। নাম ইসুরু। গ্রামের সমস্ত মানুষ একসঙ্গে রুখে দাঁড়াল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। এক সময় ব্রিটিশদের কবল থেকে তারা গ্রামটাকে মুক্তও করে নিল, ঠিক যেমন তমলুকের ক্ষেত্রে হয়েছিল। সগর্বে ইসরু ঘোষণা করেছিল স্বাধীন হওয়ার কথা। সেটিই ছিল প্রথম গ্রাম যেটা সেই সময় নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করে। এখনকার পাহাড়ে ঘেরা গ্রামটিকে দেখলে তখনকার কথা কল্পনা করতে একটু অসুবিধাই হবে। ধানখেত, পুকুর— সবকিছু মিলিয়ে সুন্দর শান্ত একটি গ্রাম। এই গ্রামই সেই সময় বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। শাসকের সঙ্গে সংঘর্ষে মারাও যান অনেকে। তাও দমেনি ইসুরু। যদি কখনও ইসুরুতে যান, সেখানকার বীরভদ্রেশ্বর মন্দিরের ভেতরের প্রাঙ্গণে দেখতে পাবেন একটা কালো পাথরের তৈরি শহিদ স্তম্ভ। যারা সেই সংঘর্ষে মারা গিয়েছিলেন, তাঁদেরকে স্মরণ করতেই এই বেদি বানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু মন্দির প্রাঙ্গণে কেন? কারণ এখান থেকেই শুরু হয়েছিল লড়াই। আজও, স্বাধীনতা দিবসের দিন সমস্ত গ্রামবাসীরা মন্দিরে এসে জড়ো হন। গান্ধী টুপি, জাতীয় পতাকা নিয়ে তাঁরা সবাই একসঙ্গে পালন করেন দিনটি। হাজার হোক, ইসুরুই তো ভারতের প্রথম স্বাধীন গ্রাম!