পথের ধারের আগাছা চেনাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা, লকডাউনেই চলছে প্রকৃতিপাঠ

ফুটপাতের উপর গজিয়ে উঠেছে একটি কয়েক হাত উঁচু আগাছা, অথবা পুরনো দেয়াল ফুঁড়ে গজিয়েছে শিকড়। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে এমনটা তো প্রায়ই চোখে পড়ে। কিন্তু সেই গাছগুলির নাম জানি না অনেকেই। বহু বছরের অভ্যস্ত নাগরিক জীবনে যে প্রকৃতির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ আমরা মুছে ফেলেছি। কিন্তু যদি রাস্তার ধারে বা দেয়ালের গায়ে কেউ লিখে দিয়ে যায় সেই গাছের নাম! হ্যাঁ এমনটাই দেখা যাচ্ছে ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের অনেক শহরে।


এই দুই দেশের রাস্তার ধারে ধারে গজিয়ে ওঠা গাছের কাছে দেখা যাচ্ছে কেউ সাদা চক দিয়ে নাম লিখে দিয়ে গিয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চোখে পড়ছে পথচলতি মানুষের। তাঁরা আবার পরিচিত হচ্ছেন প্রকৃতির বিপুল জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে। আর এই কাজটা করছেন একদল বোটানিস্ট। তাঁদের একটি সংগঠনও তৈরি হয়ে গিয়েছে। তার নাম, 'মোর দ্যান উইড' বা আগাছার থেকে বেশি। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মধু সংগ্রহ কেন্দ্রগুলির ৫০ শতাংশ মধুর উৎস রাস্তার ধারে গজিয়ে ওঠা এই গাছগুলি। এদের আশ্রয় করে বেঁচে থাকে অসংখ্য পতঙ্গ। তাই স্বাভাবিকভাবেই নিছক আগাছার স্তরে ফেলে দিতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরা।


ইউরোপের এই বোটানিস্টদের উদ্যোগ ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে বহু মানুষের। একেকটি শহরে দেখা যাচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০টি নতুন গাছের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন সেখানকার মানুষ। তাঁদের এই কাজের ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক মাধ্যমেও। যদিও ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের রাস্তার ধরে কোনো অনুমতি ছাড়া কিছু লেখা আইনত অপরাধ। কিন্তু সমস্তকিছু বোধহয় আইনের কিছু ধারা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। আর তাই কোনো বেআইনি কাজ করার সংশয় নেই উদ্যোক্তাদের মধ্যে। বরং যা আছে তা হল মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির যোগাযোগ ঘটাতে পারার তৃপ্তি। প্রকৃতির বিপুল বৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিত হলে হয়তো মানুষ সেই বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ করতেও উদ্যোগী হবে।

Powered by Froala Editor

More From Author See More