স্বল্প খরচে করোনা পরীক্ষার র‍্যাপিড কিট নিয়ে এল খড়গপুর আইআইটি

প্রতিদিন নতুন নতুন করে রেকর্ড তৈরি করছে করোনা সংক্রমণ। তার মধ্যে সম্প্রতি ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণের বিষয়টিও স্বীকৃতি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রয়োজন প্রতিদিন কয়েক লক্ষ পরীক্ষা। কিন্তু তার তো খরচ অনেক। এবং এই কাজে যে পরিমাণ দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে তা নেই। এই পরিস্থিতিতেই এগিয়ে এলেন খড়গপুর আইআইটির গবেষকরা। তাঁদের তৈরি নতুন যন্ত্র নজিরবিহীন কম খরচে এবং প্রায় কোনো প্রশিক্ষিত কর্মী ছাড়াই সফলভাবে করোনা পরীক্ষা করতে পারবে।

সম্প্রতি খড়গপুর আইআইটির ক্রনিক্যালে এই যন্ত্রটির কথা জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক ডা. সুমন চক্রবর্তী এবং স্কুল অফ বায়ো-সায়েন্সের ডা. অরিন্দম মন্ডল প্রথম এই যন্ত্র তোইরির কাজ শুরু করেন। এরপর কাজে হাত লাগান আরও অনেকে। এভাবেই যৌথ প্রচেষ্টায় জন্ম নিল নতুন আবিষ্কার। সাধারণ র‍্যাপিড টেস্টিং যন্ত্রের মতোই এই যন্ত্রটি। আর প্রতিটা পরীক্ষার পর একবার পেপার কার্টিজ পরিবর্তন করলেই আবার ব্যবহার করা যাবে।

আইআইটি সূত্রে জানানো হয়েছে প্রতিটা পরীক্ষার জন্য খরচ পড়বে মোটামুটি ৪০০ টাকা। আর সম্পূর্ণ যন্ত্রটির দাম পড়বে মোটামুটি ২০০০ টাকা। যেখানে কয়েক লক্ষ টাকার আরটি-পিসিআর যন্ত্রের দাম কয়েক লক্ষ এবং একেকটি পরীক্ষার খরচও কয়েক হাজার, সেখানে এই স্বল্প খরচের যন্ত্র পরীক্ষার সম্ভবনা আরও অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে। পরীক্ষার জন্য প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির থুতুর নমূনা সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট কার্টিজের উপর রাখতে হবে। আর এরপর ১ ঘণ্টার মধ্যেই যন্ত্র জানিয়ে দেবে তাতে কোনো ভাইরাসের আরএনএ পাওয়া গিয়েছে কিনা।

যদিও এখনও কোনো শংসাপত্র মেলেনি, কিন্তু এই যন্ত্রের কার্যকারিতার বিষয়ে নিঃসংশয় আইআইটির অধ্যাপকরা। সেইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, এই যন্ত্র শুধু করোনা ভাইরাস নয়, যে-কোনো ধরনের আরএনএ ভাইরাসের পরীক্ষাই সফলভাবে করতে পারবে। তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই আবিষ্কার যে এক সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে চলেছে, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা ভি. কে. তিওয়ারি জানিয়েছেন স্বল্প খরচে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি তৈরি করার কাজে আগেও দৃষ্টান্ত রেখেছে খড়গপুর আইআইটি। এই আবিস্কার সেই তালিকায় আরেক নজির তৈরি করল। এখন এই যন্ত্রের সুবিধা কত তাড়াতাড়ি সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে আসে, সেটাই প্রতীক্ষার বিষয়।

Powered by Froala Editor