বন আর ফসল একসঙ্গে বাড়ুক—মূলনিবাসী মানুষদের দেখানো পথেই পরিবেশ রক্ষার চেষ্টা বিশ্বজুড়ে

চাষের জমির পাশেই বেড়ে উঠছে বন। কিংবা উল্টো করে বললে, বন জন্ম দেওয়ার পাশাপাশি একই জমিতে চলছে চাষ। এই পদ্ধতির গালভরা নাম আছে একটা—এগ্রোফরেস্ট্রি। মূলত, গাছ, গুল্ম এবং শাকসবজি একসঙ্গে চাষ করাকেই অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি বলে। সেই কত্ত যুগ আগে থেকেই মূলনিবাসী মানুষরা এই পদ্ধতিতেই গাছ আর ফসলের জন্ম দিয়ে আসছেন একত্রে। এখন সেই আদিম পদ্ধতির দিকেই ফের তাকাচ্ছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা।

পৃথিবীর জলবায়ু বদলাচ্ছে দ্রুত। বন কমছে হুহু করে। বাতাসে গ্রিন হাউজ গ্যাস বাড়ছে। বন দরকার, এদিকে চাষের জন্যও জমি দরকার। সেই কারণেই এগ্রোফরেস্ট্রির কাছে ফিরে যাওয়া। চাষের পাশাপাশি একটি জঙ্গল গড়ে তোলার চেষ্টাও চলে এই পদ্ধতিতে। আদিবাসী মানুষ একসময় বুঝতে পেরেছিলেন, দরকারি গাছপালাকে একসঙ্গে পাশাপাশি চাষ করলে, প্রতিটি আলাদা প্রজাতির গাছপালার মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সেখানে প্রতিটি প্রজাতি একে অপরের উপকার করে। তাদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অ্যাগ্রোফোরস্ট্রি যদি এক বিলিয়ন হেক্টর জুড়ে থাকে, তাহলে বায়ুমণ্ডল থেকে ৪৪ গিগাটন কার্বন বিচ্ছিন্ন করতে পারে সে। কফি এবং চকোলেট - এই প্রযুক্তিতে চাষের সর্বাধিক স্বীকৃত উদাহরণ। ইন্দোনেশিয়া, হন্ডুরাস ও থাইল্যাবন্ডে অ্যাগ্রোফরেস্ট্রির অনুশীলন চলছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। আদিবাসী মানুষদের আবিষ্কৃত এই পদ্ধতিতে পরিবেশ রক্ষার নতুন দিশা দেখতে পাচ্ছে তথাকথিত ‘শহুরে সভ্য’-রাও।

More From Author See More