ঝাড়গ্রাম জেলার গুপ্তমণি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বালিভাসা। সেখান থেকে একটু খানি এগোলেই চোখে পড়বে ধু ধু ফাঁকা জমি। কংক্রিটের বিশাল এলাকা। দেখেই মনে হয়, পরিত্যক্ত। তবে একটা সময় এই তল্লাটই গমগম করে উঠত সেনাদের ভারী বুটের আওয়াজে। প্লেনের শব্দে। হ্যাঁ, এটাই হল দুধকুণ্ডি এয়ারফিল্ড। বাংলায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম জীবিত নিদর্শন।
ঝাড়গ্রাম শহর থেকে প্রায় ১৯ কিমি দূরে অবস্থিত এই এয়ারফিল্ড। ১৯৪২ সালে তৈরি করা হয়েছিল এটি। তার আগে এই জায়গাটা ছিল জঙ্গলে ঢাকা। সেইসব কেটেই এই জায়গা তৈরি হয়। তবে ব্রিটিশরা নয়, মার্কিন বিমানবাহিনীর এয়ারফিল্ড ছিল এটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখান থেকেই জাপান, বার্মা, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে যুদ্ধের জন্য রওনা দিত বোমারু বিমান। ১৯৪৪ সালে মার্কিন বিমানবাহিনীর ৪৪৪তম বোম্বারডমেন্ট স্কোয়াড এখান থেকেই বার্মার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এছাড়াও আরও কিছু অভিযান চালানো হয়েছিল এখান থেকেই। শুধু দুধকুণ্ডিই নয়, আরও বেশ কিছু এয়ারফিল্ড তৈরি করা হয়েছিল এখানে।
১৯৪৫ সাল পর্যন্ত বিমান বাহিনীর যাতায়াত ছিল এখানে। ১৯৪৬ থেকে পুরোপুরি বেওয়ারিশ হয়ে যায় দুধকুণ্ডি এয়ারফিল্ড। সেই সময়ের অনেকটা নষ্ট হয়ে গেলেও, রানওয়ের কিছুটা আজও বেঁচে আছে। কলাইকুন্ডা এয়ার ফোর্স স্টেশনের তত্ত্বাবধানে এখানের কিছু অংশে ফায়ারিং প্র্যাকটিস করানো হয় এখন। এভাবেই পড়ে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম ক্ষেত্র।