অলিম্পিকের স্বাস্থ্যবিধি অবৈজ্ঞানিক, দাবি স্বাস্থ্যবিদদের

করোনা পরিস্থিতিতে অলিম্পিকের আয়োজন বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এর মধ্যেই আবারও বিতর্ক উস্কে দিলেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি অলিম্পিকের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি বেঁধে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। আর সেই স্বাস্থ্যবিধিকে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্বাস্থ্যবিদ অ্যানি স্প্যারো ও তাঁর সহকর্মীরা। ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’ পত্রিকায় ব্যাখ্যা করেছেন তার অলিম্পিক কমিটির প্রস্তাবের নানাবিধ সীমাবদ্ধতা।

ইতিমধ্যে করোনা অতিমারীর চতুর্থ তরঙ্গের শিকার জাপান। তাছাড়া টিকাকরণ প্রক্রিয়াও প্রায় শুরু হয়নি বললেই চলে। এই অবস্থায় জাপানে অলিম্পিকের মতো বিরাট মাপের খেলার আয়োজন কতটা যুক্তিযুক্ত, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন জাপানের নাগরিকরাই। ইতিমধ্যে ৪০ লক্ষ মানুষের সই সম্বলিত অনলাইন পিটিশন জমা পড়েছে জাপান সরকারের হাতে। কয়েক লক্ষ মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন টোকিও স্টেডিয়ামের সামনে। দাবি একটাই, অলিম্পিক বাতিল করতে হবে। তবে অলিম্পিকের আয়োজন বাতিল করা মানে একটা বিরাট অংশের আর্থিক লোকসান। অন্যদিকে এই গ্রীষ্মের মধ্যে খেলার আয়োজন করা না গেলে জাপান থেকে আয়োজন সরিয়ে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি।

এই জটিলতার মধ্যেই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি থেকে প্রকাশ করা হয়েছে একটি ‘প্লে-বুক’। তাতে ছবি দিয়ে বিশদে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা হবে। এমনকি কমিটির দাবি, এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেশও নেওয়া হয়েছে। তবু অ্যানি স্প্যারো জানিয়েছেন, গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে বৈজ্ঞানিক চিন্তার ছিঁটেফোঁটাও নেই। তিনি নিজেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন পরিদর্শক। ফলে সংস্থার উপদেশ কতটা মেনে চলা হয়েছে, তাই নিয়েও প্রশ্ন জাগছে। অন্যদিকে অ্যানি স্প্যারো দাবি করেছেন, অবিলম্বে এই বিষয়ে সক্রিয় হস্তক্ষেপ করুক সংস্থা। যদি অলিম্পিকের আয়োজন সম্ভব হয়, তবে তা চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনেই সম্ভব। টোকিও অলিম্পিকের মিডিয়া পার্টনার আসাহি সিমবুন পত্রিকাও সরাসরি খেলা বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে।

এখনও অবধি নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৩ জুলাই অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তবে জটিলতা মেটার বদলে তা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। জাপান সরকার অলিম্পিকের আয়োজনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। অথচ বিরোধিতা উঠছে সমস্ত স্তর থেকে। এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সে-দিকেই তাকিয়ে আছেন সবাই।

আরও পড়ুন
নিঃসঙ্গ মৃত্যুর ভয়ে আতঙ্কিত জাপানের ‘বাটারফ্লাই লেডি’

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
অলিম্পিক বন্ধের দাবিতে লক্ষাধিক স্বাক্ষর সংগ্রহ জাপানিদের